জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) আপডেট হলে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যাবে। সে ক্ষেত্রে বিদেশি হিসেবে গণ্য করা হবে, ফলে দেশ ছাড়ার মতো পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে। এ আশঙ্কা থেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন প্রদীপ কর (৫৭) নামে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার এক ব্যক্তি। গতকাল সকালের দিকে নিজ ঘর থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পাশাপাশি এ নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কও শুরু হয়েছে। জানা গেছে, এনআরসি যে যথেষ্ট আতঙ্কিত ছিলেন প্রদীপ। এমনকি সোমবার ভারতের নির্বাচন কমিশনের তরফে এসআইআর ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে আরও বিচলিত হয়ে পড়েন তিনি। তার ঘর থেকে উদ্ধার হয় একটি ডায়েরি। যেখানে লেখা ছিল, ‘আমার মৃত্যুর জন্য এনআরসি দায়ী।’ বিষয়টি জানার পরপরই বিকালে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে ঘটনাটি উল্লেখ করে শোক জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
পোস্টে তিনি লেখেন, ‘৫৭ বছর বয়সি প্রদীপ কর, এনআরসি আতঙ্কে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি একটি চিরকুট রেখে গেছেন- যেখানে লেখা আছে, ‘আমার মৃত্যুর জন্য এনআরসি দায়ী।’
আত্মহত্যার জন্য বিজেপিকে দায়ী করে মমতা লিখেন, ‘বিজেপির ভয় ও বিভাজনের রাজনীতির এর চেয়ে বড় অভিযোগ আর কী হতে পারে? বছরের পর বছর ধরে বিজেপি কীভাবে এনআরসির হুমকি দিয়ে নিরীহ নাগরিকদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে, মিথ্যা ছড়িয়েছে, আতঙ্ক ছড়িয়েছে এবং ভোটের জন্য নিরাপত্তাহীনতাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে, তা ভাবতেই আমার ভয় লাগে। এই মর্মান্তিক মৃত্যু বিজেপির বিষাক্ত প্রচারণার প্রত্যক্ষ পরিণতি। যারা দিল্লিতে বসে জাতীয়তাবাদ প্রচার করে তারা সাধারণ ভারতীয়দের এমন হতাশার দিকে ঠেলে দিয়েছে যে তারা তাদের নিজের দেশেই মারা যাচ্ছে, এই ভয়ে যে তাদের বিদেশি ঘোষণা করা হবে।’