গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলের স্থল হামলা ইতোমধ্যেই সেখানকার হাসপাতালগুলোকে ‘ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে’ নিয়ে গেছে বলে গতকাল সতর্ক করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস। জেনেভা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে। তিনি এই অমানবিক পরিস্থিতির অবসান দাবি করে বলেন, ‘গাজার উত্তরাঞ্চলে সামরিক অনুপ্রবেশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার আদেশ নতুন করে মানুষকে বাস্তুচ্যুতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে আর এর ফলে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে মানবিক মর্যাদার অযোগ্য একটি সংকুচিত এলাকায় যেতে বাধ্য করা হচ্ছে।’ তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে সতর্ক করেছেন যে, হাসপাতালগুলোতে ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি রোগী ভর্তি আছে।-রয়টার্স
ক্রমবর্ধমান সহিংসতায় এগুলো ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। ডব্লিউএইচও-এর প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ও চিকিৎসা সারঞ্জামাদি সরবরাহ প্রদানে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাজ্য : ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির ঘোষণা দেওয়া হবে বলে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে টাইমস। এর আগে স্টারমার বলেছিলেন, গাজার মানবিক পরিস্থিতি উন্নয়নে ইসরায়েল কিছু শর্ত না মানলে তিনি এ মাসেই নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দেবেন। জাতিসংঘ সম্মেলনে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক শুরু হবে ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে। টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্পের সফর চলাকালে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতির ঘোষণা দিলে তা চেকার্সে দুই নেতার পরিকল্পিত সংবাদ সম্মেলনকে ছাপিয়ে যেতে পারে। এ কারণেই ট্রাম্প সফর শেষে যুক্তরাষ্ট্রের ফেরার পর ফিলিস্তিন নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণাটি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার। ওয়াশিংটনের আপত্তির মুখেও ব্রিটিশ সরকার এ পথে এগোচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন এখনই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিতে চায় না। তবে ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার মতো দেশগুলোও নিউইয়র্কের জাতিসংঘ সম্মেলনে একই পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। গত জুলাইয়ে গাজায় মানবিক পরিস্থিতির অবনতির প্রেক্ষাপটে ব্রিটিশ লেবার দলের এমপিদের চাপের মুখে স্টারমার বলেছিলেন, তিনি ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেবেন। তবে তিনি শর্ত দিয়ে বলেছিলেন, ইসরায়েলকে অবশ্যই যুদ্ধবিরতিতে যেতে হবে, দীর্ঘমেয়াদি দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পথ মেনে নিতে হবে এবং জাতিসংঘকে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ পুনরায় শুরু করতে দিতে হবে। কিন্তু ইসরায়েল সরকারের বিরোধিতার কারণে এসব শর্ত পূরণের সম্ভাবনা ক্ষীণ। এর মধ্যেই গাজায় বড় ধরনের স্থল অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল। এই কারণে হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৪৭টি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এদিকে বুধবার লন্ডনের মেয়র সাদিক খান প্রথমবারের মতো গাজায় চলমান পরিস্থিতিকে ‘গণহত্যা’ বলে বর্ণনা করেছেন।