নতুন করে সমস্যার মুখে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার। তৃণমূলের দুইজন বিধায়কসহ প্রায় অর্ধ শতাধিক তৃণমূল কাউন্সিলর নাম লেখালেন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-তে। ক্ষমতাসীন শিবিরে নাম লেখালেন একজন সিপিআইএম বিধায়কও।
মঙ্গলবার দুপুরে দিল্লিতে দীনদয়াল মার্গে বিজেপি-র সদর দফতরে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপি'তে যোগ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাসপেন্ডেড বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়, বিষ্ণুপুরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক তুষার ভট্টাচার্য এবং হেমতাবাদের সিপিআইএম বিধায়ক দেবেন্দ্র নাথ রায়। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, বিজেপি নেতা মুকুল রায় প্রমুখ।
শুভ্রাংশু সাথেই এদিন বিজেপি শিবিরে যোগ দিলেন রাজ্যটির উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার কাঁচরাপাড়া, হালিশহর, নৈহাটি, কল্যাণী পুরসভার প্রায় অর্ধ শতাধিক কাউন্সিলররাও। বিজেপিতে যোগদানের পরই তৃণমূলের সাবেক নেতারা সকলেই ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দিতে থাকেন।
পরে কৈলাশ বিজয়বর্গীয় জানান, মমতার ‘৩ বিধায়ক এবং ৫০ থেকে ৬০ জন কাউন্সিলর আজ বিজেপিতে যোগদান করলেন। আরও ৪০ বিধায়ক আমাদের সাথে সম্পর্ক রাখছেন। আগামী দিনে এই যোগদান পর্ব চলতে থাকবে।’ তার অভিমত ‘একনায়কন্ত্র থেকে অনেকেই মুক্ত হতে চাইছেন। এটা তারই ফল।’
উল্লেখ্য, দল বিরোধী মন্তব্যের জন্য কয়েকদিন আগেই শুভ্রাংশুকে ছয় বছরের জন্য সাসপেন্ড করে তৃণমূল। এরপরই তিনি জানান হাফ ছেড়ে বাঁচলেন। স্বাভাবিকভাবেই তার বিজেপিতে যোগদানের সম্ভবনা নিয়ে জল্পনা বাড়ছিল। অবশেষে সোমবার বিকালেই কলকাতা থেকে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দেন শুভ্রাংশ। এরপর মঙ্গলবারই দল পরিবর্তন। কয়েক বছর আগেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন শুভ্রাংশুর পিতা তথা এক সময়য়ের মমতার অত্যন্ত ঘনিষ্ট মুকুল রায়। দক্ষ সংগঠক বলে পরিচিত মুকুল দল ছাড়ার পরই একদিকে যেমন তৃণমূলের শক্তি কিছুটা ক্ষয় হতে শুরু করে তেমনি উল্টো ফল দেখা যায় রাজ্যের বিজেপির ক্ষেত্রে।
এদিকে, দলবদল প্রসঙ্গে তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া হল জাহাজ যখন ঢোকে তখন ইঁদুরেরা এভাবেই পালায়। এ প্রসঙ্গে এদিন কলকাতায় তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘ঝড়ের মুখে যখন জাহাজ পড়ে বা জাহাজ যখন টলমল করে তখন সবচেয়ে আগে ঝাঁপ মারে ইঁদুরা। কিন্তু তারা জানে না যে কোথায় ঝাঁপ মারছে? তারা সমুদ্রের পানিতে তলিয়ে যায়। এটা ঠিক যে একটা রাজনৈতিক দল কয়েকটা আসন পেয়েছে-তাতে ঘাবড়ে গিয়ে যারা পালিয়ে যাচ্ছে-তারা আদর্শের রাজনীতি করে না।’
বিডি-প্রতিদিন/২৮ মে, ২০১৯/মাহবুব