ঘটনাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হাওড়ার। সেখানে ২৪ বছর ওই বয়সী আকাশ দাস নামের এক যুবক দৌলতদেবী গুপ্তা নামের ৪৬ বছর বয়সী এক নারীর সঙ্গে প্রেম ও অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, কিন্তু হঠাৎ করেই টাকার জন্য প্রেমিককে হুমকি দিতে শুরু করেন দৌলতদেবী। টাকা না পেলে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের কথা ফাঁস করে দেয়ার হুমকি দেন। চাপ সহ্য করতে না পেরে অঞ্জনবাবুর বাড়ি লাগোয়া একটি পাঁচতলা ফ্ল্যাটের ছাদ থেকে ঝাঁপ দেন আকাশ।
এ ঘটনার দু’দিন বাদেই রহস্য উদঘাটন হয়েছে। বের হয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। এরই মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে কথিত সেই প্রেমিকাকে। পুলিশ জানিয়েছে, আকাশ দাস নামে ওই যুবক পেশায় রঙের মিস্ত্রি। বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দলে। সালকিয়ার সংঘশ্রী ক্লাবের কাছে একটি বাড়িতে বেশকিছুদিন দেয়াল রঙের কাজ করছিল সে। এই এলাকায় আগেও অনেক কাজ করেছে মৃত আকাশ। কাজের সূত্রেই রসিক কৃষ্ণ ব্যানার্জি লেনের বাসিন্দা দৌলতদেবী গুপ্তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে আকাশের। দশ দিনের প্রেমেই ১১ ফেব্রুয়ারি বাজালপাড়ার পাঁচতলা ফ্ল্যাটের ছাদে দৌলতদেবী গুপ্তা ও আকাশের শারীরিক সম্পর্ক হয়। এরপরই বিষয়টি ফ্ল্যাট ও আশপাশের বাসিন্দাদের জানিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে আকাশের থেকে টাকা চায় ওই নারী। এতে আতঙ্কে আকাশ পাঁচ তলা ফ্ল্যাটের ছাদ থেকে পাশের দোতলা বাড়ির ছাদে ঝাঁপ দেয়।
এসময় বাড়ির ছাদে বিকট শব্দ পেয়ে হাওড়ার মালিপাঁচঘড়ার বাসিন্দা অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে আকাশকে। সঙ্গে সঙ্গে থানায় ফোন করেন অঞ্জনবাবু। পাশাপাশি প্রতিবেশীদের সাহায্য নিয়ে হাওড়া জেলা হাসপাতালে রক্তাক্ত যুবককে নিয়ে যান তিনি। সেখানেই মৃত্যু হয় তার। এরপরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, ওই যুবক কে, কেনই বা ৬১ নম্বর বাজাল পাড়া লেনে অঞ্জনবাবুর দোতলা বাড়ির ছাদে পড়লেন। এক পর্যায়ে তদন্তে নামতেই পুলিশের সামনে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
পরে অঞ্জনবাবু মালিপাঁচঘড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতেই আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে দৌলতদেবী গুপ্তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এদিন তাকে হাওড়া আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে চেয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, ওই নারী আগে ফ্ল্যাটটিতে রান্নার কাজ করায় সে জানতো রাত ১১টা পর্যন্ত মূল দরজা খোলা থাকে। পাশাপাশি কমন সিঁড়ি দিয়ে কে ঢুকছে বা বের হচ্ছে তা কেউ খোঁজ রাখেন না। হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি নর্থ অনুপম সিং জানান, একটি বাড়ির ছাদে অস্বাভাবিকভাবে এক ব্যক্তির রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার তদন্তের জন্য মালিপাঁচঘড়া থানার আইসি অমিত কুমার মিত্রের নেতৃত্বে হাওড়া সিটি পুলিশের একটি দল গঠন করা হয়েছিল। যে ব্যক্তির বাড়িতে আকাশ পড়েছিলেন সেখানে একটি ফরেন্সিক দলও পাঠানো হয়। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে যুবকের ঝাঁপ দেয়ার ঘটনাটি সামনে আসে। সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতেই রহস্যভেদ করে পুলিশ।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক