কলকাতায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এক বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও এক জন বাংলাদেশি। শনিবার ভোর রাতে কলকাতার নিউ মার্কেট এলাকার মির্জা গালিব স্ট্রিটের একটি গেস্ট হাউজে ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয় এক বাংলাদেশি নারীর।
জানা গেছে, ভোর সাড়ে ৪টা নাগাদ নিউমার্কেট এলাকার ৫ নম্বর মির্জা গালিব স্ট্রিটের ‘রাহবার’ নামে চরাতলা ভবনের ওই গেস্ট হাউজের দোতলা থেকে আগুনের ফুলকি দেখা যায়, আগুন ছড়িয়ে পড়ে গেস্ট হাউজের অন্য ঘরগুলিতেও। কালো ধোঁয়ায় তার চারপাশ ছেয়ে যায়।
ওই গেস্ট হাউজের এক কর্মী জানান, রিসেপশনে ওই আগুন লাগে, পরে তা অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে ভস্মীভূত গেস্ট হাউজের ১১টি ঘর। আর সেখানেই ছিলেন বাংলাদেশি পর্যটকরা। কলকাতায় চিকিৎসা করতে আসা প্রায় ২৮ জন বাংলাদেশি ওই গেস্ট হাউজটিতে ছিলেন। আগুনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে তাদের মধ্যে। প্রাণ বাঁচাতে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসতে থাকেন। এরই মধ্যে আগুন লাগার পরই দ্রুততার সাথে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিসের তিনটি গাড়ি।
ঘটনাস্থলে পৌঁছায় নিউ মার্কেট থানার পুলিশ ও কলকাতা পুলিশের ডেপুটি পুলিশ কশিনার (সেন্ট্রাল) রূপেশ কুমার। ডিসির নেতৃত্বেই ওই গেস্ট হাউজ থেকে প্রায় ১৬ জন বাংলাদেশি নাগরিককে উদ্ধার করা হয়। ধোঁয়ায় বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরই মধ্যে গেস্ট হাউজের ঘর থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় শামীমাতুল আরোজ নামে ৬১ বছর বয়সী এক নারীকে। কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান তিনি। পরে হাসপাতালের তরফে তাকে মৃত বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। শামীমাতুলের স্বামীর নাম মোহাম্মদ মোসারফ হোসেন। তার বাড়ি বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জের পার কানশাত এলাকায়।
আগুনের ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন আরও এক বাংলাদেশি নাগরিক। কলকাতার মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপাতালে ভর্তি আছেন ৪৩ বছর বয়সী মাহবুব আলম নামে ওই বাংলাদেশি, তার বাড়ি বাংলাদেশের বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জের চর খাগাটা এলাকায়।
অন্যদিকে আগুনের ফুলকি ও ধোঁয়ায় গুরতর আহত পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বাসিন্দা ৩৫ বছর বয়সী মইনিুল হক ভর্তি রয়েছেন এসএসকেএম হাসপাতালে। বাকীদের অন্য গেস্ট হাউজগুলিতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষের অনুমান শর্ট সার্কিট থেকেই ওই গেস্ট হাউজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে নিউমার্কেট থানা। ইতিমধ্যেই ওই গেস্ট হাউজটি সিলগালা করে দিয়েছে পুলিশ।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা