ভারতে নতুন করে চোখ রাঙাচ্ছে করোনা ভাইরাস। হঠাৎ করেই বাড়তে শুরু করেছে সংক্রমণ। গোটা দেশে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে প্রায় তিন হাজারের কাছাকাছি। যদিও একটাই স্বস্তির খবর, তা হল মৃত্যুর সংখ্যা হ্রাস পাওয়া।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৯২৭ জন। সবমিলিয়ে ভারতে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৪ কোটি ৩০ লাখ ৬৫ হাজার ৪৯৬ জন। গত চব্বিশ ঘন্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩২ জনের। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা প্রাণ গেছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ৬৫৪ জনের।
চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, ভারতে করোনার চতুর্থ ঢেউ আছড়ে পড়েছে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক পরস্থিতি দিল্লিতে। সেখানে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজারের আশাপাশ থাকছে। ইতোমধ্যেই দিল্লি সহ কিছু রাজ্যের স্কুল শিক্ষার্থীদের শরীরে এই ভাইরাসের লক্ষণ দেখা দেওয়ায় অভিভাবকদের মধ্যেও উদ্বেগ বাড়ছে। দক্ষিণ ভারতেও করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। কেরালা, কর্ণাটকের মতো রাজ্যগুলিতেও নতুন করে সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে।
এমন এক পরিস্থিতিতে বুধবার সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সাথে ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য, স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ প্রমুখ। কলকাতা থেকে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
বৈঠক করোনার ভাইরাসকে ভয় না পেয়ে সতর্কতা অবলম্বন করার ওপরই বেশি জোর দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন ‘করোনার হুমকি থাকা সত্ত্বেও, করোনা মোকাবিলায় আমাদের দেশের অবস্থা বাকি দেশগুলির তুলনায় অনেকটাই ভাল। আমরা দেখেছি যে কিভাবে ইউরোপের দেশগুলিতে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রণ ও তার উপপ্রজাতি দাপিয়ে বেড়িয়েছে। ওমিক্রণের উপ-প্রজাতির কারণেই গত কয়েক মাসে বহু দেশেই করোনা সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে। সেক্ষেত্রে বাকি দেশগুলির তুলনায় ভারতের অবস্থা এখনও নিয়ন্ত্রণেই আছে।’
ভারতের কিছু রাজ্যে করোনার প্রকোপ বাড়ার প্রসঙ্গ টেনে মোদি সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন ‘কয়েক মাস আগেও করোনা আমাদের অনেক শিক্ষা দিয়েছে। আমরা আতঙ্কিত হইনি উল্টো এর বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আমরা স্বাস্থ্য অবকাঠামো ও অক্সিজেন সরবরাহ প্রক্রিয়া আরও শক্তিশালী করতে পেরেছি। তৃতীয় ঢেউয়ের সময় কোন রাজ্যের পরিস্থিতিই হাতের বাইরে চলে যায়নি। এসময় করোনা টিকা অভিযানও অনেক সাহায্য করেছে। এটা আমাদের সকল দেশবাসীর কাছেই গর্বের যে শতকরা ৯৬ ভাগের বেশি মানুষ প্রথম ডোজের টিকা পেয়েছে। ১৫ বছরের উর্দ্ধে ৮৫ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় ডোজের টিকা পেয়েছে।’
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল