কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে। এই উন্নয়নের গতিকে আরো বেগবান ও গতিময় করতে হবে। আর তবেই বিশ্বের বুকে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটা উন্নত দেশে রূপান্তর হবে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে একটা অন্যতম উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হবে।’
‘বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন’ ভারত কমিটির উদ্যোগে রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতার রোটারি সদন অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনা’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমের কর্মীদের প্রশ্নের উত্তরে এই মন্তব্য করেন তিনি। মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, যে কৌশল আমরা নিয়েছি, যেভাবে আমরা বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি, তাতে এই লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্পদ সম্ভব।’
ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসে। সেই নির্বাচনে আমরা জনগণের বিপুল সমর্থন নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। উনি গত ১৪ বছরে অর্থনীতির সকল ক্ষেত্রে অনেক উন্নয়ন করেছে যে উন্নয়নগুলো দৃশ্যমান, সারা পৃথিবীতে সেগুলো প্রশংসিত হয়েছে।’
সামাজিক বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৫ সালে আমরা দানা জাতীয় খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। সামাজিক ইনডেক্সগুলোতেও আমরা খুব ভালো ফল করেছি। আমাদের দারিদ্রতা অর্ধেক কমিয়ে এনেছি অর্থাৎ ৪০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ, অতি দরিদ্র ভাগ যেখানে ১৮-১৯ শতাংশ ছিল সেটা এখন ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। অবকাঠামো, ব্রিজ, পদ্মা সেতু, কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভাবনীয় সাফল্য এসেছে। ১০০টি ইকোনমিক জোন তৈরি করা হয়েছে সেখানে শিল্প, কলকারখানা করা হচ্ছে, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
এই আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের সমবায় দপ্তরের মন্ত্রী অরূপ রায়, কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসের উপ হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াসসহ বিশিষ্টরা। এর আগে, এদিন বিকালে কলকাতার পাঁচ তারকা হোটেল (গ্র্যান্ড ওবেরয়)-এ কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাককে শুভেচ্ছা জানায় কলকাতার ‘ইন্দো বাংলা প্রেস ক্লাব’। প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে মন্ত্রীর হাতে ফুলের তোড়া এবং ঐতিহ্যবাহী কে.সি দাসের মিষ্টির প্যাকেট তুলে দেন ক্লাব সভাপতি কিংশুক চক্রবর্তী এবং মেন্টর পরিতোষ পাল। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এডভোকেট নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসের উপ হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস ও কলকাতা প্রেসক্লাবের সভাপতি স্নেহাশীর সুরসহ ক্লাবের অন্য সদস্যরা।
ইন্দো বাংলা প্রেস ক্লাবের সার্বিক সাফল্য কামনা করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এই ফোরামের মাধ্যম দিয়েই ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যেকার সম্পর্ক আরো গভীর হবে।’ মন্ত্রী আরো জানান, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সহযোগিতা করেছে, জীবন বাজি রেখে আমাদের পাশে থেকে যুদ্ধ করেছে, পরম আত্মত্যাগ স্বীকার করেছে। এমন একটি দেশের সাথে একটি ফোরামের মাধ্যমে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে, গভীর হবে।’
তার অভিমত, ‘আমরা উভয় দেশই সকল দিক থেকে একে অপরের উপর নির্ভরশীল। যদিও অর্থনৈতিক এবং ভৌগোলিকগত দিক থেকে ভারত বড় দেশ। তারপরেও দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। একাধিক বিষয়ে আমাদের উভয় দেশের মধ্যে সাজুজ্য রয়েছে।’
বিডি-প্রতিদিন/শফিক