জিরাফ পরিবারে নতুন অতিথি

ঢাকা চিড়িয়াখানায় জিরাফ ক্লিওপেট্রার পরিবারে নতুন অতিথির আগমনে বইছে আনন্দের বন্যা। গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টায় লম্বা গলার ফুটফুটে একটি জিরাফের জন্ম হয়। এশিয়ার কোনো চিড়িয়াখানায় জিরাফের বাচ্চা জন্ম দেওয়ার এটা দ্বিতীয় ঘটনা। নতুন অতিথির আগমনে পুরো চিড়িয়াখানায় বিরাজ করছে খুশির পরিবেশ। বাচ্চাকে কাছে পেয়ে মা জিরাফের আচরণ একেবারে বদলে গেছে। জিহ্বা দিয়ে চেটে চেটে আদর করছে সদ্য জন্ম নেওয়া বাচ্চাকে। পরম স্নেহে দুধ খাওয়াচ্ছে। এর মধ্যে বার বার দাঁড়ানোর চেষ্টা করে সদ্যোজাত বাচ্চাটি। বাচ্চার কষ্ট দেখে মা মাথা বাড়িয়ে দেয়। এক পর্যায়ে লম্বা দুই পা বাড়িয়ে দেয়। দীর্ঘ দেড় ঘণ্টা চেষ্টার পর দাঁড়াতে সক্ষম হয় বাচ্চা জিরাফ। এর পাশাপাশি মা হচ্ছে বাঘশাবক সেই যূথী। কয়েক দিন আগে তার গর্ভধারণের বিষয়টি চিড়িয়াখানার নজরে আসে। বাচ্চা ও মা জিরাফের সখ্য, মাখামাখি ও আনন্দনাচন দেখে খুশি চিড়িয়াখানার কর্তাব্যক্তিরা। সন্ধ্যায় দেখা যায়, শেডের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছোটাছুটি করছে। নানা ভঙ্গিমায় নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে বাচ্চাটি। এমনকি রাতে শেডের ভিতর অভিজাত ভঙ্গিমায় চলাফেরা করতে দেখা গেছে মা ও বাচ্চাকে। মিটমিট করে তাকাচ্ছে বাচ্চা জিরাফটি। ঢাকা চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. এনায়েত হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ১৫ মাস গর্ভধারণের পর বাচ্চার জন্ম হলো। চিড়িয়াখানায় আবদ্ধ অবস্থায় জিরাফের বাচ্চার জন্ম দেওয়া একেবারেই বিরল ঘটনা। প্রাণিজগতের ইতিহাসে স্থান করে নিল ঢাকার চিড়িয়াখানা। কেন্দ্রীয় পশু হাসপাতালের প্রধান ভেটেরিনারি সার্জন ডা. এ বি এম শহিদুল্লাহ বলেন, ঢাকা চিড়িয়াখানা এখন প্রাণিসম্পদ রক্ষায় পারদর্শী। সদ্য জন্ম নেওয়া বাচ্চা জিরাফ মা ক্লিওপেট্রা ভালো আছে। চিড়িয়াখানা সূত্র জানায়, মা জিরাফ সুস্থ আছে। স্বাভাবিক খাবারও খাচ্ছে। বাচ্চাটি দেখতে বেশ স্মার্ট, সুন্দর। নাদুসনুদুস স্বাস্থ্যবান। অচেনা পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। ভিআইপি অতিথি জিরাফ বাচ্চার খাদ্য তালিকায় আপাতত রয়েছে মায়ের দুধ। দেশি খাবারের মধ্যে রয়েছে গমের ভুসি, সয়াবিন কেক, ভাঙা ছোলা, গাছের পাতা এবং সবুজ ঘাস। ২১ দিন পার হলে দেওয়া হবে পুষ্টিযুক্ত খাদ্য। এদিকে, কয়েক দিন আগে বাঘশাবক যূথী গর্ভ ধারণ করেছে। ২০১২ সালের ১২ জুন রাজধানীর শ্যামলীর একটি বাসা থেকে জয়, যূথী ও জ্যোতি নামের তিন বাঘশাবক উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর আদালতের নির্দেশে ফিকামলি সেন্টার মালিক ও বাঘবিশেষজ্ঞ ড. আবদুল ওয়াদুদের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়। এখানে কয়েক দিন থাকার পর কঙ্বাজারের ডুলাহাজারায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কয়েক মাস আগে যূথীকে ঢাকা চিড়িয়াখানায় আনা হয়। এখানে আসার পর অন্য একটি বাঘের সঙ্গে যূথীকে রাখা হয়। ড. আবদুল ওয়াদুদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যূথীকে এখন আলাদাভাবে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা দরকার। নইলে অঘটন ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।