গোলাপি নেশা ইয়াবা এখন নতুন রঙে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখে ধুলো দিয়ে ব্যবসা চালাতেই মাদক উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীদের নতুন এ কৌশল। গোলাপি রঙের ইয়াবা ট্যাবলেট এখন বাজারে আসছে সাদা ও হলুদের সাজে। দেশের দুই-একটি স্থানে নতুন এ কৌশল ফাঁস হলেও নতুন রঙের এই ডার্টি পিল আসছে টেকনাফের নানা গোপন পথে। সম্প্রতি রাজধানী ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটকের পর ইয়াবার এ নতুন রঙের বিষয়টি নজরে আসে।
জানা গেছে, মিয়ানমার মাদকের বাজার ধরে রাখার কৌশল হিসেবে ইয়াবার রং পরিবর্তন করছে। লাল রঙের পাশাপাশি সাদা, কালো ও হলুদ রঙের ইয়াবা বাজারে মিলছে। তবে নতুন রঙের ইয়াবার চালান কম হলেও এগুলোর মূল্য একটু বেশি। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে আসছে হরেক রঙের এসব ইয়াবা। এমন কি এ ব্যবসা এখন সামাজিকভাবেও ছড়িয়ে পড়ছে। কিছু পরিবার এই কারবারকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। গত দেড় মাসে প্রায় দশ লাখ পিস ইয়াবার চালান উদ্ধার হয়েছে শুধু কক্সবাজার ও টেকনাফে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আত্মসমর্পণের উদ্যোগ নেওয়ার পরও মিয়ানমার সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে আসা এই ইয়াবা পাচার ঠেকানো যাচ্ছে না। নতুন নতুন ইয়াবা কারবারি গজিয়ে উঠছে। তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারিদের সাঙ্গপাঙ্গরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্সদের সঙ্গে আঁতাত করে ইয়াবা নিয়ে আসছে। ইয়াবার চালানের একটি অংশ চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে কক্সবাজারের উখিয়া, টেকনাফ ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ৩৮টি পয়েন্ট দিয়ে এসব ইয়াবা আসছে। নিয়মিত মাদকের অভিযান পরিচালনাকারী বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা জানান, গোলাপি রং হলে চোখে পড়ে যায় বলে ইয়াবা কারবারিরা এখন কৌশল পাল্টেছে। সাদা ও হলুদ রঙের ইয়াবার চালান নিয়ে আসছে তারা। নতুন রঙের ইয়াবা শনাক্ত করা বেশ কঠিন কাজ। এগুলো দেখতে সাধারণ ওষুধের মতো। আর কৌটায় ভরে নিয়ে এলে বোঝাই মুশকিল। এদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের মে মাস থেকে মাদকবিরোধী যে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়েছে, তার মধ্যে ইয়াবা কারবারিরাই বেশি ধরা পড়ছে। বন্দুকযুদ্ধে নিহতদের সিংহভাগই এই বড়ির কারবারে জড়িত। আর মাদকাসক্তদের ৭০ শতাংশই ইয়াবায় আসক্ত। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর সূত্র জানায়, ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগে সাদা ও হলুদ রঙের ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ হয়েছে।অধিদফতরের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। নতুন রঙের এ ইয়াবা সম্পর্কে আমরা গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করেছি।