সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

অপকর্মের হোতা সেই ছাত্রলীগ নেতা ইয়াবাসহ আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক

নানা অপরাধে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত গেন্ডারিয়ার সন্ত্রাসী রিয়াদ এবার গ্রেফতার হয়েছেন ইয়াবা নিয়ে। অন্য আরেকজনের পকেটে ইয়াবা দিয়ে সূত্রাপুর থানা পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে গেছেন। সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াজেদ আলী জানান, তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। একটি মামলা মাদকের, অপর একটি হয়েছে ইয়াবা দিয়ে হয়রানির চেষ্টার অভিযোগে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সিটি নির্বাচনের দিন রাজধানীর গেন্ডারিয়ায় সাংবাদিকদের হেনস্তা করে উল্টো সাংবাদিকের বিরুদ্ধেই জিডি করেছিলেন ছাত্রলীগের সেই সময়ের নেতা এই শহিদুল ইসলাম খান রিয়াদ। ওই ঘটনার পর সেই ছাত্রলীগ নেতার অপকর্মের ফিরিস্তি গণমাধ্যমে উঠে আসার পর তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে ছাত্রলীগ। জানা গেছে, রিয়াদ শনিবার রাতে সূত্রাপুর থানা পুলিশকে ফোন করে জানায়, ইয়াবাসহ এক যুবককে তিনি ধরে রেখেছেন। পুলিশের টিম পাঠানোর জন্য বলে। পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। এ সময় রিয়াদ ও আরও দুই যুবক সেখানে দাঁড়ানো ছিল। সূত্রাপুর থানা পুলিশের অফিসার তাকে দেখে মাদক ব্যবসায়ীর খবর জানতে চান। এ সময় রিয়াদ সেই অফিসারের সামনেই এক যুবকের পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে দিয়ে বলেন, এই যে, একে ধরে নিয়ে যান। এ সময় বিষয়টি তৎক্ষণাৎ সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াজেদ আলীর কাছে ফোনে জানান সেই অফিসার। ওসি তখন রিয়াদকেই ধরে নিয়ে আসতে নির্দেশ দেন। নির্দেশ পেয়ে পুলিশের দলটি রিয়াদসহ তিনজনকেই গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে যায়। থানায় জিজ্ঞাসাবাদের পর রিয়াদ স্বীকার করেন, আরেক যুবককে ফাঁসানোর জন্য তিনি নাটক তৈরি করেছিলেন। পরে রিয়াদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ জানায়, রিয়াদের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।  গত ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া এলাকায় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ প্রতিদিনের মাহবুব মমতাজী, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের নূরুল আমিন জাহাঙ্গীর ও দিন প্রতিদিন পত্রিকার রিপোর্টার পাপনকে আটককে রেখে শারীরিকভাবে হেনস্তা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রিয়াদ ও তার সহযোগীরা। পরে উল্টো তিন সাংবাদিকের নামেই গেন্ডারিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন আলোচিত ও বিতর্কিত এই নেতা রিয়াদ। সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে অস্ত্র কেনাবেচার সময় নাহিদুল ইসলাম ও নাজমুল হোসেন বিদেশিকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে মতিঝিল থানা পুলিশ। তাদের গ্রেফতারের পর রিয়াদের নাম উঠে আসে। সে সময় গ্রেফতারকৃতরা আদালতে ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতেও বলেছেন, ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ এবং কামরুল ইসলাম তাদের অস্ত্র বিক্রির দায়িত্ব দিয়েছিলেন। পরে পুলিশ ওই মামলায় ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ, কামরুলের নাম উল্লেখ করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ওই মামলায় রিয়াদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করে আদালত। পুলিশ জানায়, রিয়াদ পেশাদার অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায়ী।

স্থানীয়রা জানান, রিয়াদ এলাকার পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তার বিরুদ্ধে পুরান ঢাকার ওয়ারী ও গেন্ডারিয়া এলাকায় চাঁদাবাজির অভিযোগও রয়েছে। তবে অস্ত্র মামলায় রিয়াদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হলেও তখন রিয়াদ গেন্ডারিয়া থানা ছাত্রলীগের সভাপতি থাকায় তার বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি ২০১৮ সালে তাকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির পদ দেওয়া হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর