রংপুরে মধ্যরাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে লম্পট। এ ছাড়া তেঁতুলিয়ায় দুই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে তিন যুবক ও বাগেরহাটে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে গাইবান্ধায় নারী কর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যানকে আটক করেছে পুলিশ।
নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর জানান, গঙ্গাচড়ায় কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে মধ্যরাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে রাতভর ধর্ষণ করেছে এক লম্পট। পুলিশ জানায়, একই এলাকার রুহুল কুদ্দুসের ছেলে এক সন্তানের জনক আল আমিন কয়েক মাস ধরেই কোচিংয়ে যাওয়া-আসার সময় ছাত্রীটিকে উত্ত্যক্ত করত। আনুমানিক ১০ দিন আগে আল আমিন ওই ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়। তবে কিশোরীটি সাড়া দেয়নি। ১৮ নভেম্বর মধ্যরাতে কিশোরী প্রকৃতির ডাকে ঘরের বাইরে গেলে ওত পেতে থাকা আল আমিন কয়েকজন সঙ্গীসহ জোরপূর্বক তুলে নিয়ে নিজের ঘরে রাতভর ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে কিশোরী অজ্ঞান হয়ে পড়লে ধর্ষকরা পালিয়ে যায়। পরদিন সকালে বাড়ি না পেয়ে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে কিশোরীকে আল আমিনের ঘর থেকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে তার পরিবার। গঙ্গাচড়া মডেল থানার ওসি সুশান্ত কুমার সরকার বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেফতারে জোর চেষ্টা চলছে। গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, ন্যাশনাল সার্ভিসের এক নারী কর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগে সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বাদলকে (৪৮) মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযোগসূত্রে জানা যায়, গত ১৩ মার্চ চেয়ারম্যানের কাছে কাজের জন্য প্রত্যয়নপত্র আনতে যান নির্যাতিতা গৃহবধূ। এ সময় চেয়ারম্যান তাকে কৌশলে নিজ অফিসকক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করেন এবং তা ভিডিও করে রাখেন। পরে সে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গৃহবধূকে বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করেন। এ ছাড়া ১১ নভেম্বর বামুনিপাড়া গ্রামে গৃহবধূর বাড়িতে তার স্বামীর অনুপস্থিতিতে আপত্তিকর অবস্থায় চেয়ারম্যানকে আটকের চেষ্টা করে লোকজন। কিন্তু চেয়ারম্যান কৌশলে পালিয়ে যান। পরে গৃহবধূ গাইবান্ধা সদর থানায় মামলা করলে পুলিশ চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করে। গাইবান্ধা থানার ওসি মুজিবুর রহমান (তদন্ত) জানান, গৃহবধূকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, তেঁতুলিয়া উপজেলার নিজবাড়ি এলাকায় মঙ্গলবার রাতে নবম শ্রেণির দুই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পাশের কাউরগছ গ্রামের হাফিজ উদ্দিনের ছেলে ওমর ফারুক ইমন (২০), দারাজ উদ্দিনের ছেলে আনোয়ার হোসেন (২৫) ও বামনপাড়ার এনামুল হকের ছেলে সোহাগকে (২২) আটক করা হয়েছে। মামলাসূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার ওই দুই স্কুলছাত্রীকে প্রলোভন দেখিয়ে বাড়ি থেকে বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যায় আনোয়ার ও ইমন। রাতে তাদের মালিগছ এলাকার নির্জন বটগাছ তলায় নিয়ে কয়েকজন মিলে ধর্ষণ করে। পরে তাদের রেখে পালিয়ে যায়। গভীর রাতে ওই দুই কিশোরী দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ের বাড়ি আশ্রয় নেয়। পরদিন বাড়ি ফিরে বাবা-মাকে ঘটনা জানায়। এ বিষয়ে পঞ্চগড় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায় জানান, ধর্ষণের অভিযোগে তিন যুবককে আটক করা হয়েছে। আর দুই ছাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিকেলে পাঠানো হয়। বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় সদর উপজেলার কোন্ডলা গ্রামের জিন্নাত আলী শেখের ছেলে হাফিজুল ইসলামকে (২৬) গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজিজুল ইসলাম জানান, হাফিজ ভিকটিমের ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সেই সূত্রে ছাত্রীর বাড়িতে যাওয়া-আসা ছিল। হাফিজ ১৫ নভেম্বর কলেজছাত্রীকে তার বাড়িতে একা পেয়ে শ্লীলতাহানি ও নগ্ন ছবি ধারণ করে। এর পর থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে একাধিকবার ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। সর্বশেষ ২২ নভেম্বর রাতে ওই ছাত্রীর বাড়ি গিয়ে টাকা দাবি করে নইলে তার ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। ওই রাতে ছাত্রীকে আবারও ধর্ষণ করে হাফিজ। ওই ছাত্রীর করা মামলায় হাফিজকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়। বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য হাফিজের নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।