বুধবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

দুর্লভ আবাসিক লাল মুনিয়া

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

দুর্লভ আবাসিক লাল মুনিয়া

লাল মুনিয়া। আকারে ছোট হলে দেখতে ভারি সুন্দর।  এরা আমাদের দেশের দুর্লভ আবাসিক পাখি। দেশে ছয় প্রজাতির মুনিয়া পাখির মধ্যে লাল মুনিয়ার দেখা পাওয়া বড়ই দুষ্কর। ঢাকা, সিলেট ও রাজশাহী অঞ্চলে এদের বিচরণ। সম্প্রতি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ থেকে এই লাল মুনিয়ার ছবি তুলেছেন শ্রীমঙ্গলের শৌখিন ফটোগ্রাফার খোকন থৌনাউজম। এদের ইংরেজি নাম  Red Avadavat আর বৈজ্ঞানিক   নাম Amandava অঞ্চল ভেদে এরা রাঙা মুনিয়া, আলতা মুনিয়া ও সোনামুনি নামেও পরিচিত। এরা ছোট আকারের তৃণচর পাখি। প্রজনন কালে পুরুষ পাখিরা আরও রঙিন হয়ে ওঠে। এদের ঠোঁট ও কোমর লাল। মেয়ে ও পুরুষ পাখির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। প্রজননের সময় পুরুষ পাখির গায়ে লাল রঙের মাঝে সাদা ফোঁটা পড়ে। মাথার চাঁদি জলপাই-বাদামি। ঘাড়ের পেছনের অংশ, কাঁধ ও ডানার ঢাকনি কালচে বাদামি। লেজ কালো। পা ও পায়ের পাতা পীত বর্ণের। প্রজনন সময় ছাড়া পুরুষ ও মেয়েপাখির লাল কোমরসহ পিঠ অনুজ্জ্বল বাদামি থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক  মেয়েপাখির পিঠ বাদামি ও ঠোঁট লাল। বুক ও বুকের নিচে হালকা হলুদ হয়। এরা পানির কাছে তৃণভূমি, ফসলাদি জমির কাছে ছোট ঝোপ, আখখেত ও গ্রামাঞ্চলের কাশবন বা ছনবনে বিচরণ করে। সচরাচর এরা ছোট ঝাঁকে থাকে। তৃণ, নল ও আখখেতে এরা খাবার খোঁজে। এদের খাদ্যতালিকায় রয়েছে ঘাস-বীজ। মে থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে এদের প্রজনন সময়। এ সময় পুরুষ পাখি ঘাস ও নলের ডাঁটার উপরে বসে মেয়ে পাখিকে আকৃষ্ট করার জন্য গান গায়। পানির কাছে কাঁটা-ঝোপের নিচুতে ঘাস দিয়ে গোল বাসা বানায়। ৮ থেকে ১০টি ডিম দেয়। ডিমের রং সাদা। ১২ থেকে ১৬ দিনে ডিম ফুটে ছানা বের হয়। আর ছানা ফোটার ১৯ থেকে ২৪ দিনে এরা বাসা থেকে উড়াল দেয়। দুজনে মিলে বাচ্চাদের লালন করে।

ফটোগ্রাফার খোকন থৌনাউজম জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ছবি তুলছেন। কিন্তু সিলেট বিভাগে কোথাও লাল মুনিয়ার দেখা পাননি। গত কয়েকদিন আগে কমলগঞ্জের এক বনাঞ্চলে হঠাৎ করে এই লাল মুনিয়া পাখি তার চোখে পড়ে। এক দেখায়ই তিনি পাখিটিকে ক্যামেরাবন্দী করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর