বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
ঢাকা মহানগরীতে বেহাল কমিটি

থানা ও ওয়ার্ডে পদ পেতে বিতর্কিতদের দৌড়ঝাঁপ

রফিকুল ইসলাম রনি

ঢাকা মহানগরী উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডে পদ পেতে বিতর্কিতরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ফ্রিডম পার্টির সাবেক নেতা, হত্যা মামলার আসামি, বিদ্রোহী কাউন্সিলরসহ নানাভাবে যারা বিতর্কিত তারাই এখন নেতা হওয়ার জন্য মরিয়া।

দলীয় সূত্রমতে, পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পরই ওয়ার্ড ও থানা আওয়ামী লীগকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ৩১ জানুয়ারি মহানগরী দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দলীয় সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে থানা-ওয়ার্ড আওয়ামী লীগকে ঢেলে সাজানোর নির্দেশ দেন। তিনি ঘরে বসে কমিটি গঠন না করে সম্মেলনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনের নির্দেশ দেন। এর পরই মহানগরীর থানা-ওয়ার্ডে পদ পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন হাইব্রিড ও বিতর্কিতরা। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সব সময় কেন্দ্রের পর ঢাকা মহানগরীকে গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট বিবেচনা করা হয়। সে কারণে সংগঠনকে ঢেলে সাজাতে বারবার তাগাদা দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। কারণ রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম করা অথবা বিরোধী দলের আন্দোলন-সংগ্রাম ঠেকাতে মহানগরী আওয়ামী লীগ সামনের সারি থেকে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে অতীতে। মহানগরীর নতুন কমিটি ঘোষণার পর ‘মাই ম্যান’ রাখতে তৎপর কতিপয় শীর্ষ নেতা। এ সুযোগে গত কয়েক বছরে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে কিংবা দলে যোগদান করে বিত্তশালী হয়েছেন এমন নেতারা থানা-ওয়ার্ডের শীর্ষ পদে আসতে লবিং শুরু করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, মহানগরীর কিছু নেতা ইতিমধ্যে ‘এজেন্ট’ নিয়োগ দিয়ে দলের ভিতরে ‘অনুপ্রবেশ’ করানোর চেষ্টা করছেন। দুই মহানগরীর কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একসময়ের ফ্রিডম মানিক এবং পরে ক্যাসিনো খালেদ ভুইয়ার ডান হাত হিসেবে পরিচিত চিহ্নিত সন্ত্রাসী, একাধিক হত্যা মামলার আসামি, অস্ত্র মামলার আসামিরা এখন মহানগরী আওয়ামী লীগ নেতাদের বাসাবাড়িতে ধরনা দিচ্ছেন পদ পেতে। এ ছাড়া ‘বিদ্রোহী’ কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে গত সিটি নির্বাচনে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তারাও এখন থানা-ওয়ার্ডে শীর্ষ পদ চান। যদিও আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের নির্দেশ আছে যারা বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছিলেন তাদের পদে না রাখার। মহানগরীর একাধিক নেতা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন দল ক্ষমতায় থাকায় মহানগরী কমিটি এবং ওয়ার্ড-থানায় হাইব্রিড ও সুবিধাবাদীরা প্রবেশ করেছেন। ফলে দীর্ঘদিন দল করা পোড় খাওয়া নেতারা কোণঠাসা হয়ে আছেন। এবারও কমিটিতে ‘মাই ম্যান’ হিসেবে দীর্ঘদিনের পোড় খাওয়া এবং ১/১১ সময়ে মাঠে সক্রিয় থাকা নেতাদের বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে অভিযোগ করছেন কেউ কেউ। জানতে চাইলে ঢাকা মহানগরী উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বর্ধিত সভা করে থানা ও ওয়ার্ড কমিটিগুলো গঠন করা হবে। ঘরে বসে কোনো কমিটি করা হবে না। তৃণমূল নেতারাই তাদের নেতৃত্ব বেছে নেবেন। এখানে কোনো হাইব্রিড ও বিদ্রোহী কাউন্সিলরের জায়গা পাওয়ার সুযোগ নেই।’ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ডা. দিলীপ রায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সাবেক ছাত্রনেতা, ১/১১-এর সময় ভূমিকা বিবেচনায় নিয়েই নেতা বানানো হবে। অন্য পার্টি থেকে আসাদের পদ-পদবি দেওয়ার সুযোগ নেই।’

সর্বশেষ খবর