রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অবৈধ বিটকয়েন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মূলহোতা ইসমাইল হোসেন সুমনসহ ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। সুমন বিটকয়েন ব্যবসার মাধ্যমে দেশে ফ্ল্যাট, প্লট, সুপার শপসহ নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে অল্প দিনেই হয়ে গেছেন অঢেল সম্পদের মালিক।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১ এর একটি দল রবিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উত্তর বাড্ডা এলাকার বেসিক বিজ মার্কেটিং নামের প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে অবৈধ বিটকয়েন ব্যবসার মূলহোতা ও অনলাইনে প্রতারণার অভিযোগে প্রথমে সুমনকে আটক করে। পরে অন্যদের গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- আবুল বাশার রুবেল (২৮), আরমান পিয়াস (৩১), রায়হান আলম সিদ্দিকি (২৮), মো. জোবায়ের (১৮), মেহেদী হাসান রাহাত (২৪), মেহেদী হাসান (১৯), রাকিবুল হাসান (২৩) রাকিবুল ইসলাম (২২), সোলাইমান ইসলাম (২১), মো. জাকারিয়া (১৮), আরাফাত হোসেন (২২)। অভিযান চালিয়ে ২৯টি ডেস্কটপ কম্পিউটার, তিনটি ল্যাপটপ, ১৫টি মোবাইল ফোন, ১টি ট্যাবলেট ফোন ও বিবিধ নথিপত্র জব্দ করা হয়। র্যাব বলছে, আউট সোর্সিং মার্কেটিং প্রতিষ্ঠানের আড়ালে অবৈধ বিট কয়েন ব্যবসা চালাতেন গ্রেফতার হওয়া সুমন।
গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, বাংলাদেশে অবৈধ বিট কয়েন ব্যবসায় চক্রের মূলহোতা কয়েন সুমনের একাধিক ভার্চুয়াল ওয়ালেট রয়েছে। এসব ভার্চুয়াল ওয়ালেটে মজুদ রয়েছে বিট কয়েনে অর্জিত লক্ষাধিক ডলার। গত এক বছরে তিনি বিট কয়েনের মাধ্যমে অবৈধভাবে ১২ থেকে ১৫ লাখ ডলার লেনদেন করেছেন। আল মঈন বলেন, সুমন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে মাস্টার্স পাস করেন। ২০১৩ সালে ছোট্ট একটি দোকানে বাচ্চাদের খেলনা ও কাপড়ের ব্যবসা শুরু করেন। সেখান থেকেই তিনি শুরু করেন বিট কয়েনের ব্যবসা। গড়ে তোলেন বেসিক বিজ মার্কেটিং নামক অনলাইন আউট সোর্সিং প্রতিষ্ঠান। মূলত এর আড়ালেই দীর্ঘদিন ধরে চলছিল তার এই ব্যবসা। শুরুতে একটি ছোট অফিস থাকলেও তা বড় হয়। বর্তমানে বাড্ডায় তিনটি ফ্লোরে ৩২ জন কর্মচারী নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন তিনি। প্রতিষ্ঠানটি তিনটি শিফটে ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আল মঈন বলেন, বাংলাদেশে বিট কয়েন নিষিদ্ধ, তবে বেশ কিছু দেশেই বিট কয়েন বৈধ। সম্প্রতি ভারতে এটা বৈধ করা হয়েছে। সিঙ্গাপুরেও বৈধ। এসব দেশের সঙ্গে লেনদেন রয়েছে বা দেশীয় বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসায়ী এবং আন্তর্জাতিক জুয়াড়িদের নিকট বিট কয়েন লেনদেন ও বিক্রি করতেন সুমন। গ্রেফতার অপর ১১ জন তার প্রতারণা, জালিয়াতি ও অবৈধ বিট কয়েন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ও সহযোগী।