শুক্রবার, ২৮ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

প্রথমবার হত্যায় ব্যর্থ হন আসমা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রথমবার হত্যা করতে গিয়েও ব্যর্থ হন রাজধানীর দক্ষিণখানে নিহত আজহারের স্ত্রী আসমা। তিনি চেতনানাশক কিছু খাইয়ে তাকে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন। ১৩ রমজান এ হত্যাচেষ্টা করা হয়। এতে আজহার মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে বেশ কিছুদিন চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হন তিনি। ঈদের পর পরকীয়ায় আসক্ত আসমা তার প্রেমিক ইমামকে দিয়ে স্বামী আজহারকে হত্যা করে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন। নিহতের স্ত্রী আসমা আক্তার ও মসজিদের ইমাম মো. আবদুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদে এমন সব তথ্য পাচ্ছেন তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা বলেছেন, আসমার স্বামী আজহার ও তাদের চার বছরের সন্তানকে কোরআন শিক্ষা দেওয়ার জন্য ইমাম আবদুর রহমান নিয়মিত তাদের বাসায় যেতেন। এরপর আসমা ও ইমামের মধ্যে সখ্যতা গড়ে ওঠে। সেটি আস্তে আস্তে প্রেমে রূপ নেয়। প্রেমের সম্পর্ক গভীর হয়ে একসময় সেটি দৈহিক সম্পর্কে গড়ায়। তাদের দুজনের আচরণ সন্দেহ করে আজহার। অনৈতিক কাজ করতে গিয়ে ইমাম একবার ধরাও পড়েন। পরে ইমামকে বাসায় আসতে নিষেধ করেন আজহার। এতেও চিড় ধরেনি আসমা-ইমামের সম্পর্কে। এরপরও ইমাম নিয়মিত বাসায় আসতেন। আবদুর রহমান ও আসমা বাসার বাইরেও কয়েকবার দেখা করেন। তাদের সম্পর্ক গভীর থেকে গভীর হতে থাকে। পরে পথের কাঁটা হিসেবে আজহারকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। প্রথমবার আসমা হত্যাচেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পরে তার প্রেমিক ইমাম আবদুর রহমানকে দিয়ে হত্যাচেষ্টা সফল করেন। আর নিয়মিত যোগাযোগের জন্য ইমামের কেনা সিম ও মোবাইল সেট ব্যবহার করতেন আসমা। সেই মোবাইলে হত্যার আগে ও পরে অনেক কথা হয়েছে। হত্যার পর ইমাম আসমাকে ফোন করে বলেছিলেন, আজহারকে কুপিয়ে শেষ করে দিয়েছি, ছয় টুকরো লাশ মসজিদের সেপটিক ট্যাংকে।

আজহারকে খুন করে লাশ গুমের বিষয়টি জানলেও আসমা নাটক সাজান। স্বামীর ফোন বন্ধ থাকায় তিনি নিখোঁজ রয়েছেন বলে স্বজনদের কাছে গল্প ফাঁদেন। ঢাকায় এসে স্বামীর সন্ধানও করেন, না পেয়ে আবার টাঙ্গাইলেও চলে যান। স্বামী খুন হলেও আসমা স্বাভাবিক ছিলেন।

 

গত ১৯ মে থেকে নিখোঁজ ছিলেন গার্মেন্টকর্মী আজহার। পরে ২৪ মে রাজধানীর দক্ষিণখানের সরদারবাড়ি জামে মসজিদের সেপটিক ট্যাংক থেকে আজহারের ছয় টুকরো লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মোহাম্মদ হাসান বাদী হয়ে দক্ষিণখান থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় দক্ষিণখানের সরদারবাড়ি জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. আবদুর রহমান এবং নিহত আজহারের স্ত্রী আসমা আক্তারকে আসামি করা হয়। গত বুধবার ওই মামলায় আবদুর রহমান ও আসমা আক্তারকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দক্ষিণখান থানার এসআই অনুজ কুমার সরকার জানান, ইমাম আবদুর রহমান ও নিহতের স্ত্রী আসমা আক্তারকে হত্যার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আসমা প্রথমবার হত্যাচেষ্টা করে ব্যর্থ হন। কিন্তু দ্বিতীয়বার প্রেমিক ইমামের মাধ্যমে তা সফল করেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে আজহার খুনের আদ্যোপান্ত জানার চেষ্টা চলছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর