সোমবার, ২৬ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

নিজের সন্তান কি না সন্দেহে বাবা খুন করলেন ছেলেকে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

‘সাত মাসে কোনো শিশুর জন্ম হয় কি না- এ সন্দেহ থেকে বাবা তার ৯ বছরের ছেলেসন্তানকে হত্যা করেন।’ গতকাল দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার সাদাতের আদালতে শিশু সায়মনকে হত্যার কথা স্বীকার করে বাবা বাদল মিয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। এর আগে বাদল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলামের কাছে শিশুপুত্রকে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৫১ ধারায় জবানবন্দি দেন। জানা গেছে, বাদল মিয়া সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের নদ্দাপাড়ার বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন সৌদি আরবে ছিলেন। তার তিন ছেলের মধ্যে সায়মন বড়। সে স্থানীয় একটি মাদরাসার ছাত্র। ওসি এমরানুল ইসলাম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে বাদল মিয়া জানান, দীর্ঘদিন তিনি সৌদি আরব ছিলেন। ২০১২ সালে দেশে ফিরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার ভাদুঘর গ্রামের দেওয়ান পাড়ায় বিয়ে করেন। বিয়ের ৫ মাস পর তিনি আবার সৌদি চলে যান। সেখানে যাওয়ার দুই মাস পর সায়মনের জন্ম হয়। এতে তার সন্দেহ হয় এই ছেলে তার কি না। সাত মাসে কোনো শিশুর জন্ম হয় কি না। এক বছর পর বাদল আবারও দেশে আসেন। পরে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন বিয়ের আগে তার স্ত্রীর সঙ্গে এক ছেলের সম্পর্ক ছিল। বাদল মিয়ার সন্দেহ হয় সায়মন ওই ছেলের সন্তান। বিয়ের সময় তার স্ত্রী গর্ভবতী ছিল। সায়মনের পর আয়মন ও নাঈম নামে তার আরও দুই ছেলের জন্ম হয়। কিন্তু সেই দুই ছেলের সঙ্গে সায়মনের চেহারার কোনো মিল নেই। এ ছাড়া সায়মন ছিল একটু বেপরোয়া। সে প্রায়ই তার দুই ছেলেকে মারধর করত। গত শুক্রবারও সে তার ছোট ছেলে নাঈমকে মারধর করে। এসব সন্দেহের কারণে তিনি সায়মনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। আদালতের বরাত দিয়ে সদর মডেল থানার ওসি জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী শনিবার ভোরবেলা সে সায়মনকে ঘুম থেকে তুলে তার সঙ্গে ঘাস কাটতে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে জমিতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে সে শিশু সায়মনকে গলা কেটে হত্যা করে লাশ ধানি জমিতে ফেলে দেয়। পরে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাদল মিয়া বাড়িতে এসে শিশু সায়মনকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। এক পর্যায়ে পরিবারের লোকজনকে নিয়ে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে ধানি জমি থেকে গলাকাটা অবস্থায় শিশু সায়মনের লাশ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে পুলিশ শিশু সায়মনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায় ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাদল মিয়াকে থানায় নিয়ে যায়। ওসি বলেন, আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার পর বাদল মিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়।

সর্বশেষ খবর