কুমিল্লার হোমনায় বিয়েবাড়িতে ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২৪ জন আহত হয়েছেন। গতকাল হোমনার ঘাড়মোড়া বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। উভয় পক্ষের আহতরা হলেন- রাজীব মিয়া, শাহ আলম, জিলানী, অজিত, শাহ আলম, নজরুল মিয়া, কবির হোসেন, ইকবাল মিয়া, আশাবুদ্দিন, ইকবাল হোসেন, কেটা মায়া, আজগর আলী, সানাউল্লাহ, আরিফ, শুভ, জিলানি, জুয়েল, তানভীর, সাইদুল, মোমেন, বাদশা মিয়া ও হৃদয়। এর মধ্যে রাজীব মিয়া ও শাহ আলম গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে হোমনা উপজেলার বড় ঘাড়মোড়া গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের মেয়ের হলুদের অনুষ্ঠান চলার সময় পাশের হুজুরকান্দি গ্রামের রাসেল, ইমরান, অন্তরসহ ৮-৯ জন এসে মেয়েদের ছবি উঠাতে থাকে। এ সময় বড় ঘাড়মোড়া গ্রামের কয়েকজন এসব ছবি মুছে ফেলতে বলেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে পরদিন শনিবার সকালে বড় ঘাড়মোড়া গ্রামের আউয়াল মিয়া বাজারে এলে হুজুরকান্দির কয়েকজন তাকে মারধর করেন। এ ঘটনায় আউয়াল মিয়ার ভাই জাহাঙ্গীর আলম হুজুরকান্দির ১৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ হুজুরকান্দির বকুল নামের একজনকে গ্রেফতার করে। এ নিয়ে দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এসব ঘটনার জেরে গতকাল সকাল ৮টার দিকে দুই গ্রামের লোকজন ঘাড়মোড়া বাজারে ভয়াবহ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় দুজন গুলিবিদ্ধসহ ২৪ জন আহত হয়। এদের মধ্যে ১২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি ও বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বড় ঘাড়মোড়া গ্রামের আউয়াল মিয়া জানান, হুজুরকান্দির কয়েকজন আমাদের বাড়িতে এসে মেয়েদের ছবি উঠায়। এ সব ছবি মুছে ফেলতে বলায় তারা উত্তেজিত হয়ে লোকজনকে মারধর করে। গ্রামের একজন শনিবার বাজারে গেলে হুজুরকান্দির লোকজন তাকে মারধর করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গতকাল সকালে হুজুরকান্দির লোকজন আমাদের গ্রামের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। তাদের গুলিতে দুজন গুলিবিদ্ধসহ আমাদের ১৫ জন আহত হয়েছেন। হুজুরকান্দির গোলাম মোস্তফা জানান, ঘটনা আমরা মিটমাটের জন্য চেষ্টা করছিলাম। এ সময় বড় ঘাড়মোড়া গ্রামের মানুষ আমাদের গ্রামের লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ১০-১৫ জন আহত হয়েছেন। কোনো গুলির ঘটনা ঘটেনি।
ইটের আঘাতে আমাদের লোকজন আহত হয়েছেন। ঘাড়মোড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজাহান মোল্লা জানান, বিষয়টি মীমাংসার জন্য বসলে হুজুরকান্দি ও বড় ঘাড়মোড়া গ্রামের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হোমনা থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কায়েস আকন্দ জানান, বিয়েবাড়িতে ছবি তোলা নিয়ে মারামারির ঘটনায় থানায় মামলা হলে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনার জেরে দুই পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। একজন এয়ারগান নিয়ে এসেছিল বলে শুনেছি। গুলির বিষয়ে বলতে পারব না।
