গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধর্মপুর (ছড়ারপাতা) গ্রামে ২৯ অক্টোবর রাতে বাদীর বাসায় আপত্তিকর অবস্থায় গ্রামবাসীর হাতে আটক হন উপজেলার কঞ্চিবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) তোফাজ্জল হোসেন। ওই ঘটনায় তাকে প্রত্যাহার করে গাইবান্ধা পুলিশ লাইনে সংযুক্তও করা হয়। এদিকে সেই এএসআইকে লাঞ্ছিত ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে পুলিশ বাদী হয়ে অর্ধশতাধিক গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। সে মামলায় গতকাল পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহিল জামান মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় ২০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৬০-৭০ জনের বিরুদ্ধে শনিবার থানায় মামলা হয়েছে। কঞ্চিবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এ মামলায় সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার উত্তর ধর্মপুর গ্রামের জহুরুল হক, রবিউল ইসলাম, সুমন মিয়া, হামিদুল ইসলাম, আবদুল খালেক, আমজাদ হোসেন, মুকুল মিয়া, বকুল মিয়া, রাজু মিয়া, জয়নাল আবেদীন, শাহজাহান সিদ্দিক, পাঁচগাছী শান্তিরাম গ্রামের আজিজুর রহমান ও গাইবান্ধা সদরের ফারাজি পাড়ার নাজমুল হক। গ্রেফতার ব্যক্তিদের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। তবে রিমান্ড শুনানির তারিখ ধার্য হয়নি। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি। পুলিশের মামলায় বলা হয়েছে, ছড়ারপাতা গ্রামের এক মামলার বাদীর গাছ জোর করে কেটে নেওয়ার অভিযোগ পেয়ে ২৯ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টার দিকে এএসআই তোফাজ্জল হোসেন সাদা পোশাকে তার বাড়িতে যান। পরে বাদীর (এক প্রবাসীর স্ত্রী) অভিযোগ শুনে আসার সময় ওই নারীর ভাসুর মাসুদ মিয়া এএসআই তোফাজ্জলকে গালমন্দ করেন। এরপর গুজব রটিয়ে চিৎকার করে গ্রামবাসীকে জড়ো করে তোফাজ্জলকে আটক করে উঠানের আমগাছে বেঁধে রাখে। পরে মাসুদসহ কয়েকজন তোফাজ্জলকে বেধড়ক মারপিট করেন। এ ছাড়া তার পকেটে থাকা নগদ টাকা ও হাতঘড়ি লুট করে। প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ছড়ারপাতা গ্রামে গোয়ালঘরে সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা এএসআই তোফাজ্জলকে আটক করে গাছে বেঁধে রেখে পুলিশে খবর দেয়। কিছুদিন আগে ওই নারীর ভাসুরের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ হয়। স্বামী প্রবাসে থাকায় ভাসুরের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই নারী। সেই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে এএসআই তোফাজ্জল ওই নারীর সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন।
