শুক্রবার, ১ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা
সংঘর্ষ-সহিংসতা

ফরিদপুরে চার গ্রামবাসীর সংঘর্ষ আগুন গুলি

ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

ফরিদপুরে চার গ্রামবাসীর সংঘর্ষ আগুন গুলি

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বিবদমান দুই পক্ষের নেতৃত্বে চার গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের সময় দুটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং ১৩টি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

গতকাল দুপুর দেড়টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষের সহস্রাধিক মানুষ দেশীয় অস্ত্র ঢাল, সড়কি, বল্লম, টোটা ও ইট নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের পুখুড়িয়া, ব্রাহ্মণকান্দা, খাঁকান্দা ও নাজিরপুর গ্রামের বাসিন্দারা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মানিকদহ ইউপির সাবেক ইউপি সদস্য পুখড়িয়া গ্রামের করিম মাতুব্বর (৭৬) ও ব্রাহ্মণকান্দা গ্রামের ইয়াকুব আলী মিয়া (৬২) একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন। অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন পুখরিয়ার তুহিন খাঁ (৩৫) ও খাঁকান্দা গ্রামের কালাম মোল্লা (৭০)। সংঘর্ষের সময় তুহিন খাঁ ও কালাম মোল্লার সমর্থক খাঁকান্দার সেকেন ভুইয়া ও পুখড়িয়ার হারুণ মিয়ার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এরা দুজন তুহিন খাঁর সমর্থক। এ ছাড়া সংঘর্ষের সময় উভয় পক্ষের অন্তত ১৩টি বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। এ সময় বেশ কয়েকটি গরু লুট করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।  আহতদের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ এ পর্যন্ত লুটপাট করে নেওয়া চারটি গরু উদ্ধার করেছে। এলাকাবাসী জানায়, এই দুই পক্ষের মধ্যে স্থানীয় অধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কয়েক বছর ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধের জেরে এর আগে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘরে ঘরে তল্লাশি করে অস্ত্র উদ্ধার করেছে। পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান শান্তি সমাবেশ করেছেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর আবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এই দুই পক্ষই ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর, চরভদ্রাসন) আসনের বর্তমান স্বতন্ত্র দলীয় এমপি মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরীর সমর্থক। গত ২১ মার্চ তুহিন খাঁর দলের সমর্থক ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আতিকর কাজীকে পুখুরিয়া রেল স্টেশন এলাকায় কুপিয়ে জখম করা হয়। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সম্প্রতি পুলিশ ওই মামলার আসামি হিসেবে চারজনকে গ্রেফতার করে। এর জের ধরেই গতকাল এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) ফাহিমা কাদের চৌধুরী বলেন, সংঘর্ষের খবর শুনে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর