বাগেরহাটে ইসলাম ও মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তি ও অবমাননাকর পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে গতকাল দুপুরে চিতলমারী থানায় হামলা, পুলিশের দুটি গাড়ি, চারটি মোটরসাইকেল, থানার জানালার কাচ ও আসবাবপত্র ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আহত হন ১২ পুলিশ সদস্য। সরকারি সম্পদ রক্ষা ও উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে ২৪ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়লে অনেকেই গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধদের মধ্যে ৯ জন চিতলমারী হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছেন। পরিবেশ শান্ত রাখতে চিতলমারী থানায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে। বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের প্রধান ও পুলিশ পরিদর্শক এস এম আশরাফুল আলম জানান, চিতলমারীর মেয়ে শেরেবাংলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী রণিত বালা রনি (১৮) তার ‘রণিত বালা রনি’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে ইসলাম ধর্ম ও মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি ও অবমাননা করে পোস্ট দেয়। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে রবিবার রাতে পুলিশ রণিত বালা রনিকে তার ব্যবহৃত মোবাইলসহ আটক করে থানায় নিয়ে আসে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কলেজ ছাত্রী রনি জানায় তার আইডি হ্যাক করে অন্য কেউ এ ধরনের পোস্ট দিয়েছে। গতকাল এই পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। দুপুর ১২টার দিকে উত্তেজিত লোকজন চিতলমারী থানার সামনে জড়ো হয়ে কলেজছাত্রী রনি’র বিচারের দাবি জানাতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা থানা ভবন লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। থানা কম্পাউন্ডে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ও থানার পিকআপ, চারটি মোটরসাইকেলসহ থানার জানালার কাচ ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। হামলায় আহত হন ১২ পুলিশ সদস্য। এ সময় পুলিশ ২৪ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
চিতলমারী স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মামুন হাসান জানান, গুলিবিদ্ধ ৯ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের বেশির ভাগই শর্টগানের গুলিতে আহত হয়েছেন। অন্যদিকে থানায় গিয়ে ১২ পুলিশ সদস্যকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের কারও অবস্থা গুরুতর নয়। বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক জানান, কলেজছাত্রী রণিত বালা রনির ব্যবহৃত ফেসবুক আইডি হ্যাক করে অন্য কেউ বা সে নিজে পোস্ট দিয়েছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। জেলা সদর থেকে ঊর্ধ্বতন অফিসারের নেতৃত্বে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
