মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
কৃষি

বাড়ির ছাদে খামার

দিনাজপুর প্রতিনিধি

বাড়ির ছাদে খামার

বাড়ির ছাদে দৃষ্টিনন্দন ফল ও ফুলের বাগান নয়, এবার ছাগলের খামার করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন দিনাজপুরের হাকিমপুর পৌরসভার চণ্ডীপুরের শিহাব শাহারিয়ার মাহিম। শখের বশে তোতাপুরি জাতের দুটি ছাগল পালনের মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন খামার। এ খামার এখন বাণিজ্যিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আয় হচ্ছে প্রতি মাসে গড়ে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। বর্তমানে ওই খামারে তোতাপুরি জাতের ৩৭টি ছাগল রয়েছে। এ জাতের ছাগল পালন লাভজনক হওয়ায় দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসছে খামার দেখতে। বাড়ির দ্বিতীয় তলার ছাদে খামারটি গড়ে তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করা যুবক শিহাব শাহারিয়ার মাহিম। ২০১৪ সালে শখের বশে ছাগল পালন শুরু থেকে আজ বাণিজ্যিক খামারে রূপান্তরিত হয়েছে। খামারটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘রিসান গোট ফার্ম’। এরই মধ্যে এ খামার থেকে ২০০ ছাগল বিক্রি করে আয় হয়েছে প্রায় ২৫ লাখ টাকা। এতে একদিকে ফিরেছে সংসারের সচ্ছলতা, অন্যদিকে পূরণ হয়েছে মায়ের স্বপ্ন। মাহিম একজন সফল খামারি। তিনি এখন সবার মডেল- পরিবারসহ স্থানীয়রা এটাই মনে করেন। এখন খামারটিতে ছোটবড় সাদা-কালো ও খয়েরি রঙের তোতাপুরি জাতের ৩৭টি ছাগল রয়েছে। বড় ছাগলগুলোর উচ্চতা প্রায় ৩ ফুট। কানগুলো ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা। এক বছর বয়সের এ জাতের একটি ছাগল থেকে ৫০ কেজি মাংস পাওয়া যায়। এর দাম ৬৫-৭০ হাজার টাকা। ছাগলছানাগুলো উপযুক্ত হতে তিন থেকে পাঁচ মাস লাগে। প্রকারভেদে ছাগলছানা ২৫ থেকে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। বড় ছাগলগুলো ৬৫ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা দাম পাওয়া যায়। খামারে ছাগল পরিচর্যার জন্য একজন সার্বক্ষণিক লোক রয়েছে। প্রতিবেশীরা বলেন, ‘বাড়ির ছাদে ফুলের বাগানের কথা জানি। কিন্তু ছাগলের খামার এই প্রথম দেখছি।’ শিহাব শাহারিয়ার মাহিম বলেন, ‘ছাদখামারের গল্পের শুরুটা ২০১৪ সালে। অসুস্থ মায়ের উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতের মুম্বাই নিয়ে যাওয়া হয়। ফেরার পথে মায়ের আবদারে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে দুটি তোতাপুরি ছাগল কিনি। ছাগলছানা দুটি ছাদে লালনপালন করছিলেন মা। ২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি মারা যান।’ তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু ছাদ ফাঁকা পড়ে আছে তাই সেটি কাজে লাগাতে এ খামার ছাদে গড়ে তুলি। বিদেশি জাতের ছাগল হলেও এটি পালনে আলাদা কোনো সমস্যা হয় না। দেশি ছাগল যা খায় এগুলোও তা-ই খায়। এর জন্য আলাদা কোনো খাদ্য তালিকা নেই।’ ছাগল কিনতে আসা আসলাম হোসেন বলেন, ‘রিসান ফার্ম থেকে ৮০ হাজার টাকায় দুটি ছাগলছানা কিনেছি। ছাগলগুলো দেখতে অনেক সুন্দর। ছাদে ছাগলের খামার দেখে নিজের মধ্যে উৎসাহ জেগেছে।’ হাকিমপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. ফাইজা খাতুন বলেন, ‘এ এলাকায় এত সুন্দর একটি বিদেশি ছাগলের খামার মানুষের নজর কেড়েছে। এটা আমাদের সমাজের জন্য দৃষ্টান্ত। অন্য কেউ এমন খামার করতে চাইলে সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হবে।’

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর