মো. আইয়ুব আলী। পেশায় ব্যবসায়ী। থাকেন ঢাকার মগবাজারে। এসেছেন রিহ্যাব মেলায়। মিডিয়াম বাজেটের মধ্যে ফ্ল্যাট কিনতে চান তিনি। বলেন, ‘আমি সবুজায়ন পছন্দ করি। একই ছাদের নিচে সব আবাসন কোম্পানি বিভিন্ন অফার নিয়ে এসেছে। আমার বাজেটের মধ্যে অনেক ফ্ল্যাটের লোকেশন পছন্দ হয়েছে। বাজেট অনুযায়ী লোকেশন দেখার জন্য এসেছি। আমি ইস্কাটনের দিকে ফ্ল্যাট খুঁজছি। বাজেটে মিলমতো হলে ফ্ল্যাট কিনব।’
শ্যামপুর পোস্তগোলা থেকে আগত ইমরান হোসেন বলেন, ‘আমি মূলত ফ্ল্যাট ব্যবসায় ইনভেস্ট করতে এসেছি। ফ্ল্যাট কিনে বিক্রি করব। মিডিয়াম বাজেটে হলে ভালো হয়। বসুন্ধরা আবাসিকে আমি ফ্ল্যাট কিনতে চাই। এখানে বিনিয়োগ খুবই লাভজনক।’
রিহ্যাব মেলায় এসে তারা এ মন্তব্য করেন। গতকাল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রিহ্যাব ফেয়ার, ২০২২-এর উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজলের সভাপতিত্বে গেস্ট অব অনার ছিলেন রাজউক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তাজুল ইসলাম বলেন, ড্যাপ-সংক্রান্ত রাজউকের নতুন নীতিমালার কারণে তৈরি হওয়া সমস্যা সমাধান করা হবে। তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিতে আবাসন খাতের অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। যেহেতু ড্যাপের কারণে অনেকে সমস্যায় পড়েছেন, তাই আমি এ সমস্যা সমাধানে আন্তরিকভাবে কাজ করব।’ এ সময় তাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘উন্নত জীবনের জন্য পরিকল্পিত উন্নয়ন দরকার। প্রধানমন্ত্রী আমাকে ড্যাপের সভাপতি বানিয়েছেন। আপনারা আমাকে বিশ্বাস না করার কোনো কারণ নেই। আমি ড্যাপ নিয়ে সব পক্ষের সুবিধা দেখে সিদ্ধান্ত নেব। কোনো পক্ষপাতিত্ব হবে না।’ আবাসন ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ড্যাপে কোনো জায়গায় কোনো পরিবর্তন করে যদি রাষ্ট্র ও জনগণের সমস্যার সমাধান হয়, তবে সেটা আমরা করব। আপনারা ড্যাপ নিয়ে সরকারের ভুলগুলো ধরিয়ে দিন। সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব করুন।’
রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, ‘আমাদের সরকারের প্রতি আস্থা আছে। তবে একদিকে নির্মাণসামগ্রীর দাম বৃদ্ধি, অন্যদিকে করোনা-পরবর্তী অর্থনৈতিক দুরবস্থায় এখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে আমাদের বিক্রিতে মন্দা চলছে। ব্যবসায়ীরাও হতাশ। এর মধ্যে ড্যাপের সমস্যায় অনেকেই কাজ করতে পারছেন না। সেটা নিরসনে নির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছি। এ সমস্যা সমাধান হলে আবারও আমরা আগের মতো অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারব।’ মেলায় রূপায়ণ সিটির সেলস ম্যানেজার মো. জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমাদের মেইন জিনিস হলো মানুষকে তার সুবিধামতো বসবাসের ব্যবস্থা তৈরি করে দেওয়া। খেলার মাঠ, সবুজায়নকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। মানুষ যেন বুকভরে নিঃশ্বাস নিতে পারে। এজন্য আমাদের প্রজেক্টে সব ধরনের সুবিধা রাখা হয়েছে। আমাদের এ প্রজেক্টে কমিউনিটি যানবাহনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’
ডম ইনো কোম্পানির অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মাহবুবুর রহমান রুবেল বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে উন্নত করার জন্য কাজ করছি। প্রত্যেক মানুষকে আবাসনের আওতায় নিয়ে আসতে চাই। আমরা কোয়ালিটি নিয়ে আপোস করি না। আমাদের ফ্ল্যাটগুলো সাধারণত ৭ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত স্কয়ার ফিট দাম হয়ে থাকে। বর্তমানে আমাদের ৫৬টি প্রজেক্টের কাজ চলমান রয়েছে।’
আবাসন খাতের সবচেয়ে বড় আয়োজন ‘রিহ্যাব ফেয়ার, ২০২২’। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হওয়া পাঁচ দিনব্যাপী এ মেলা চলবে রবিবার (২৫ ডিসেম্বর) পর্যন্ত। ক্রেতা-বিক্রেতার সুবিধার কথা মাথায় রেখে ২০০১ সাল থেকে রিহ্যাব ফেয়ারের আয়োজন করছে আবাসন খাতের এ সংগঠন।
আয়োজকরা জানান, এবারের মেলায় ১৮০টি স্টল রয়েছে। এর মধ্যে ৩টি ডায়মন্ড প্যাভিলিয়ন, ৭টি গোল্ড স্পন্সর, ২২টি কো-স্পন্সর, ১৬টি বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস ও ১৩টি অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানের স্টল।
