চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিজয়মেলা শেষে বাড়ি ফেরার পথে যুবলীগ-ছাত্রলীগের অন্তত ১৫ জন নেতা-কর্মীর ওপর স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাঈন উদ্দিন টিটুর অনুসারীরা হামলা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় অন্তত ছয়জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বাকিরা আহত। হামলাকারীরা ছয়টি মোটরসাইকেল ও বিজয়মেলার দুটি দোকানও ভাঙচুর করেছে। রবিবার ভোররাতে হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহতরা হলেন- চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি কাউছার আহমেদ আরিফ, উপ-মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক আমজাদ হোসেন ইমন, ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি সাহেদ বিন কামাল অনিক, সাধারণ সম্পাদক সেফায়েত হোসেন, যুবলীগ নেতা রিয়াজ উদ্দিন, মোহাম্মদ তারেক, ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ উদ্দিন, আবদুর রহমান, মিরাজ আকবর শাকিব, সাইফ উদ্দিন রিফাত, রাহুল বড়ুয়া ও সরোয়ার হাসান। এ ছাড়া মাঈন উদ্দিন টিটুর অনুসারীদের মধ্যে তিনজন আহত হয়েছেন। তাদের নাম পাওয়া যায়নি। আহতদের মধ্যে কাউছার, আমজাদ, সাহেদ, ইমতিয়াজ, রহমান ও রাহুল বড়ুয়াকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিনহাজ উদ্দিন। জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মানারাত চৌধুরী বাবু অভিযোগ করেন, ২২ ডিসেম্বর থেকে জোরারগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ১০ দিনব্যাপী মুক্তিযুদ্ধ বিজয়মেলা শুরু হয়। মেলা পরিচালনা কমিটিতে স্থান না পাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে মেলা চলাকালে টিটুর অনুসারীরা বারবার ঝামেলায় জড়াতে চেয়ে ব্যর্থ হয়। এ কারণে পূর্বপরিকল্পিতভাবে মেলার শেষ দিন নেতা-কর্মী ও মেলা পরিচালনায় থাকা কমিটির লোকজনের ওপর জোরারগঞ্জ-মুহুরী প্রজেক্ট সড়কের প্রবেশমুখে টিটুর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী শটগান, রকেট লঞ্চার ও ককটেল দিয়ে হামলা করে। এ সময় তারা হকিস্টিকসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়েও হামলা চালায়। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত ও গুলিবিদ্ধ হয়। ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদ্য নির্বাচিত সভাপতি সাহেদ বিন কামালের পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়। এ ছাড়া ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রাহুলের বুকের পাঁজর ভেঙে গেছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিজয়মেলা উদযাপন পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক রেজাউল করিম মাস্টার জানান, মেলা পরিচালনা কমিটির লোকজন ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর প্রকাশ্যে টিটুর নেতৃত্বে গুলি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আহতরা। যারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে কিংবা মানুষ হত্যা করে আধিপত্য বিস্তার করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে জানতে মাঈন উদ্দিন টিটুর ব্যক্তিগত মোবাইলে একাধিকবার ফোন করেও সংযোগ স্থাপন করা যায়নি। এদিকে হামলার পর থেকে জোরারগঞ্জ বাজারে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ জাহিদ হোসেন জানান, রবিবার ভোররাতে জোরারগঞ্জ বাজারে দুটি পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে ছুটে যায়। তবে এ ঘটনায় কেউ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।