সোমবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

উপনির্বাচনে প্রচারণা জমজমাট

প্রতিদিন ডেস্ক

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা জমে উঠেছে। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে মাঠে নেই স্বতন্ত্র প্রার্থী উকিল আবদুস সাত্তার ভুইয়া। তবে তাকে নির্বাচনে জেতাতে পুরোদমে কাজ করছে আওয়ামী লীগ। রয়েছেন বিএনপি ও জাতীয় পার্টির কিছু নেতা-কর্মী। এ ছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ ও ৩ আসনে নানান প্রতিশ্রুতি নিয়ে মানুষের দ্বারে প্রার্থীরা যাচ্ছেন। এদিকে, বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় লাঙ্গল প্রতীকের এক সমর্থককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের নির্বাচনে মাত্র একদিন প্রচারণা চালিয়ে আবারও ঢাকায় পাড়ি জমিয়েছেন বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী উকিল আবদুস সাত্তার ভুইয়া। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর উকিল সাত্তার বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে মনোনয়নপত্র কেনা থেকে শুরু করে প্রতীক বরাদ্দ পর্যন্ত তাকে মাঠে দেখা যায়নি। তার পক্ষে ছেলে মাইনুল ইসলাম তুষার নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এহেন কান্ডে যখন উকিল সাত্তারের অনুপস্থিতি নিয়ে নানা গুঞ্জন চলছিল এমন সময় গত বৃহস্পতিবার নির্বাচনী এলাকা সরাইলে এসে ৮ ঘণ্টার জন্য প্রচারণা চালান তিনি। নিজ গ্রাম পরমানন্দপুর থেকেই তিনি তার নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। প্রচারণায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি ছিল বেশ সরব। সে দিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা চালিয়ে সন্ধ্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগমের কুট্টাপাড়ার বাসায় যান আবদুস সাত্তার। পরদিন আবারও ঢাকায় ফিরে যান তিনি। গুঞ্জন রয়েছে উকিল সাত্তার নির্বাচনী মাঠে না থাকলেও তাকে নির্বাচনে জয়ী করতে তৎপর ভূমিকা পালন করছে আওয়ামী লীগ। অবশ্য জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে কাজ করছে দলটি। সেই সঙ্গে উকিল আবদুস সাত্তার একজন সৎ ব্যক্তি হওয়ায় নেতা-কর্মীরাই স্বাধীনভাবে তাকে সমর্থন করছেন। সাত্তারের পক্ষে কাজ করার আলামত মিলেছে আওয়ামী লীগের বেশ কিছু সিদ্ধান্তে। প্রথমেই নির্বাচনী মাঠ থেকে আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার। সেই সঙ্গে সাত্তারের বিভিন্ন সভায় আওয়ামী লীগ নেতাদের সরব উপস্থিতি এমনটাই আভাস মিলছে।

শনিবার সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুরের সভাপতিত্বে এক টেবিলে বসেছিল আওয়ামী লীগ নেতাদের পাশাপাশি বিএনপির বহিষ্কৃত ও সাবেক নেতা ও জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতা। সেখানে আওয়ামী লীগ নেতা রফিক উদ্দিন ঠাকুর নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়ানোর পাশাপাশি ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ ভোট সংগ্রহের কথা জানান। এই আসনের উপনির্বাচনে আবদুস সাত্তারসহ চারজন প্রার্থী আছেন। অন্য তিনজন হলেন আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি (সদ্য বহিষ্কৃত) ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু আসিফ আহমেদ, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আবদুল হামিদ ভাসানী এবং জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম। তাদের মধ্যে আবু আসিফ আশুগঞ্জ উপজেলা ও জাতীয় পার্টির আবদুল হামিদ সরাইলে প্রচারণা চালাচ্ছেন। সেটিও খুব বেশি চোখে পড়ার মতো নয়। আর জাকের পার্টির প্রার্থীকে এখনো মাঠে দেখা যায়নি।

এদিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আবদুস সাত্তারকে বিজয়ী করার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ওই নির্দেশনার কারণেই আওয়ামী লীগের তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রার্থিতা প্রত্যাহার করানো হয়। যদিও জেলা আওয়ামী লীগ বলছে, যেহেতু ওই আসনে দলীয় প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। সে কারণে দলীয় বিভাজন রোধে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য বলা হয়। তবে কোনো রকম চাপ ছিল না।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ ও ৩ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থীদের মূল লক্ষ্য ভোটারের কাছে গিয়ে তাদের মন জয় করা। তারা সব শ্রেণির মানুষকে বুকে জড়িয়ে ধরছেন এবং মার্কা দেখিয়ে ভোট চাইছেন। আর নিজের ঘরের দুয়ারে প্রার্থীদের পেয়ে ভোটাররাও বেজায় খুশি, কথা বলছেন প্রাণ খুলে। এদিকে ভোটাররা ভাবছেন যিনি এ অঞ্চলকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাবেন, তাকেই ভোট দিবেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নৌকা প্রতীকের মো. আবদুল ওদুদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আপেল প্রতীকের সামিউল হক লিটন গণসংযোগ আর পথসভায় অংশ নিচ্ছেন। তবে বিএনএফের প্রার্থী টেলিভিশন প্রতীকের কামরুজ্জামান খানের প্রচারণা চোখে পড়েনি। অপরদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুহা. জিয়াউর রহমান ও আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী খুরশিদ আলম বাচ্চু দিনরাত প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই আসনের অন্য প্রার্থীদের প্রচারণা তেমন দেখা যাচ্ছে না। তাই ভোটাররা মনে করছেন এই আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থীর।

বগুড়া : বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় লাঙ্গল প্রতীকের এক সমর্থককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

দন্ডিত ফজলুর রহমান লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী নুরুল ইসলাম ওমরের চাচাতো ভাই। মাইক্রোবাসের চারপাশে নির্বাচনী ব্যানার লাগিয়ে প্রচার-প্রচারণার অভিযোগে শনিবার বিকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জান্নাতুল নাইম তাকে জরিমানা করেন।

সর্বশেষ খবর