রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করতে প্রয়োজনে রিজার্ভ থেকে ডলার সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গতকাল বিকালে পাঠানো ওই চিঠিতে ভোজ্য তেল, চিনি, মসুর ডাল, ছোলা, খেজুরসহ ছয় ধরনের পণ্য আমদানির এলসি খুলতে ডলারের কোটা সংরক্ষণের সুপারিশ জানানো হয়েছে। উল্লিখিত পণ্য আমদানিতে শুধু বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে এ ডলার সুবিধা দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে গভর্নরের কাছে পাঠানো চিঠিতে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বেসরকারি ব্যাংকগুলো যাতে নিত্যপণ্য আমদানিতে ডলারের কোনো সংকট দেখাতে না পারে, সে লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ডলারের কোটা সংরক্ষণের সুপারিশ করা হয়েছে। কোটা সংরক্ষণের জন্য ডলার না থাকলে, প্রয়োজনে রিজার্ভ থেকে ডলার সরবরাহের অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে। গত বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত বাণিজ্য সচিবের এক জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল রিজার্ভ থেকে ডলার দিয়ে রমজানের নিত্যপণ্য আমদানির সুপারিশ জানানোর। ওই সভার সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি পাঠানোর কথা ছিল। শেষে গতকাল ওই চিঠিটি পাঠানো হয়। এর আগে গত ৪ জানুয়ারি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি সংক্রান্ত টাস্কফোর্স সভায় ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্য আমদানিতে ডলারের কোটা সংরক্ষণের অনুরোধ জানান। সেই সভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠানো হলেও ব্যবসায়ীরা এলসি খোলার জন্য ব্যাংকগুলোতে ডলার পাননি। এ পরিস্থিতিতে গত ৪ জানুয়ারি জরুরি বৈঠক করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। সরকারি পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, রমজানে চাহিদা বাড়ে এমন তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি পণ্য আমদানি কমে গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কমেছে চিনি আমদানি। আগের অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ২ লাখ মেট্রিক টন চিনি কম এসেছে। ডলার সংকটের কারণে ভোজ্য তেল, ছোলা, মসুর ডাল ও খেজুর আমদানির জন্য এলসি করতেও পারছেন না ব্যবসায়ীরা। সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারের জরুরি পণ্য হিসেবে জ্বালানি তেল ও সার আমদানির ক্ষেত্রে রিজার্ভ থেকে ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনে ডলার সহায়তা দেওয়া হয়। রিজার্ভ ভেঙে ভোগ্যপণ্য আমদানির নজির নেই। রমজান মাস ঘনিয়ে আসায় এ মুহূর্তে নিত্যপণ্যের এলসি করাকেই ‘সরকারের জরুরি কার্যক্রম’ বিবেচনা করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সে কারণেই রিজার্ভ থেকে ডলার সরবরাহের সুপারিশ গেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে।