মঙ্গলবার, ২১ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

কানের দুলের জন্য ছাত্রী হত্যায় নারীর আমৃত্যু কারাদণ্ড

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে সোনার কানের দুল খুলে নেওয়ায় কান্না করলে মুখ ও গলা চেপে স্কুলছাত্রী পপি সাহাকে (৭) হত্যার ঘটনায় রুনা আক্তার আঁখিকে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত রুনা পূর্ব কেরোয়া গ্রামের আবদুল মতিনের মেয়ে ও এমরানের স্ত্রী। ভিকটিম পপি সাগরদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ছিল ও বামনী ইউনিয়নের সাগরদি গ্রামের প্রবাসী নির্মল সাহার মেয়ে।

আদালত ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর সকালে প্রাইভেট পড়ে এসে বাড়ির পাশেই পপি খেলছিল। তখন রুনা তাকে ডেকে তার ঘরে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে তার কানের দুলগুলো খুলে নেয় রুনা। এতে পপি কান্না করে ওঠে। কান্নার শব্দ যেন কেউ শুনতে না পায় এ জন্য মুখ ও গলা চেপে ধরলে পপি মারা যায়। পরে তার লাশ খাটের নিচে লুকিয়ে রাখা হয়। বাড়ি ফিরলে রুনা তার স্বামীকে বিষয়টি জানায়। এতে পপির লাশ গুম করার পরিকল্পনা করে তারা। পরে ঘরের দুটি দরজার একটির বাইরে তালা ও অন্যটি ভিতর দিয়ে আটকে রেখে রুনা ও এমরান ঘরে অবস্থান করছিল। এদিকে ভাত খাওয়ানোর জন্য পপিকে তার মা ববিতা রানী সাহা ডাকলেও কোনো সাড়া পায়নি। সম্ভাব্য স্থানে খোঁজ নিলেও সন্ধান মেলেনি। পরে রুনা ও এমরানের ঘর বন্ধ দেখে লোকজনের সন্দেহ হয়। এ সময় দরজা ভেঙে লোকজন ঘরে ঢুকে পপির লাশ উদ্ধার এবং রুনা ও তার স্বামীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে রায়পুর থানায় মামলা দায়ের করে পপির পরিবার। পরদিন রুনা ও এমরানকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ। এ ছাড়া হত্যার ঘটনা স্বীকার করে আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। একই বছর ১১ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত রায় প্রদান করেন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে লক্ষ্মীপুর জজ কোর্টের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন বলেন, রুনার স্বামীও এ মামলার আসামি ছিলেন। তিনি হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এতে আদালত তাকে বেকসুর খালাস দেন। রায়ের সময় তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর