ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সাবেক ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সেতাফুল ইসলামসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল দুদকের সহকারী পরিচালক মাহাথীর মুহাম্মদ সামী কিশোরগঞ্জ জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে প্রায় ৯ কোটি টাকার সরকারি অর্থের হিসাবে গরমিল এবং ৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
অন্য আসামিরা হলেন- কিশোরগঞ্জ জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের সাবেক অডিটর সৈয়দুজ্জামান, আবদুল্লাহ আল মামুন, কে এ আল মামুন, কামরুজ্জামান, জাহাঙ্গীর আলম, আনিছুর রহমান, মোহাম্মদ মাহমুদ হোসেন শিমুল, রায়হান উদ্দিন, জিলন খান, আবুল কালাম এবং আবদুল হামিদ। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সাবেক ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সেতাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে ভূমি অধিগ্রহণের ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৮ সালে আরেকটি মামলা করেছিল দুদক। ওই মামলায় ইতোমধ্যে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। ওই সময় দুদক কর্মকর্তারা অভিযান চালিয়ে তার কাছ থেকে ৮৮ লাখ টাকা জব্দ করেছিলেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির আবেদন গ্রহণ, মালিকানা স্বত্বের প্রামাণিক দলিল ও সংশ্লিষ্ট রোয়েদাদ বইতে লিপিবদ্ধ করেননি। স্বত্ব মালিকানা অনুযায়ী বিতরণ না করে নিজ উদ্যোগে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের (এলএ শাখা) বিভিন্ন এলএ (ভূমি অধিগ্রহণ) চেকের মুড়ির অংশ এবং প্রাপকের অংশে ভিন্ন তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়। তারা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণার উদ্দেশে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া অ্যাডভাইস তৈরি করে কিশোরগঞ্জ জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে পাঠানোর মাধ্যমে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট এলএ (ল্যান্ড অ্যাকুইজিশন) চেকগুলো নগদায়ন ও সরকারি অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়কে বাইপাস করে বিভিন্ন এলএ চেক বিভিন্ন ব্যক্তিকে দিয়েছেন। ভুয়া অ্যাডভাইস প্রণয়ন ও ব্যবহারের মাধ্যমে এলএ কেসের সংশ্লিষ্ট লেজার বইগুলো এবং কিশোরগঞ্জ জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের সংশ্লিষ্ট রেজিস্টারগুলোর সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে ৮ কোটি ৯৬ লাখ ৫৭ হাজার ৩৬ টাকার সমপরিমাণ সরকারি অর্থের হিসাবে গরমিল দেখা যায়। একই সঙ্গে প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে সরকারের ৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
