কক্সবাজারে ইয়াবা পাচারের রুট আবারও সক্রিয় হয়েছে। টেকনাফসহ দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে উদ্বেগজনক হারে ঢুকছে ইয়াবা। টেকনাফ সীমান্ত ছাড়া বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি, আলীকদমও ইয়াবা পাচারের নিরাপদ রুট। এমনকি মিয়ানমার-ভারতে হয়ে সিলেট সীমান্ত দিয়েও দেশে অবাধে ঢুকছে ইয়াবার চালান। এ অবস্থায় বিজিবি ও র্যাব গত ৫ দিনে ৮ লাখেরও অধিক ইয়াবার চালান জব্দ করেছে। গ্রেপ্তার হয়েছে দুই কারবারি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু কক্সবাজার-বান্দরবান নয়, সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত রুটেও ফের সক্রিয় হয়েছে মাদক কারবারি চক্র। জকিগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে আসছে ইয়াবার চালান। দীর্ঘদিন এই রুটে ইয়াবা পাচার প্রায় বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি র্যাব-পুলিশের হাতে কয়েকটি চালান ধরা পড়েছে। গেল সপ্তাহে ওই রুটে বেশ কয়েকটি ইয়াবার চালান ধরা পড়ে। তবে অপর একটি সূত্র জানায়, যে হারে ইয়াবার চালান আসে তার কম অংশই ধরা পড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে। ফাঁকফোকর গলে ঠিকই ইয়াবার চালান ঢাকাসহ গন্তব্যে পৌঁছে যায়। প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর সঙ্গে দেশটির বিদ্রোহী সশস্ত্র গ্রুপ আরাকান আর্মির সংঘাত। এ সংঘাতের কারণে মিয়ানমারের উৎপাদিত ইয়াবা সরবরাহে ছেদ পড়েছিল। ৮ ডিসেম্বর রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপসহ আরাকানের বিস্তীর্ণ এলাকা আরাকান আর্মির কবজায় আসার পর ইয়াবার বাজার আবার উন্মুক্ত হয়ে গেছে। এই সুযোগে দুই দেশের কারবারিরা আবারও কোমর বেঁধে নেমেছে। ইয়াবা কারবারে দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজারের টেকনাফ-উখিয়া সীমান্তের চিহ্নিত কারবারিরা জড়িত থাকলেও রোহিঙ্গারাই বাজারটি দখল করে নেয়। বর্তমানেও ইয়াবার চোরাচালান বাজারটি রোহিঙ্গারাই নিয়ন্ত্রণ করছে। টেকনাফের বিজিবি-২ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, মিয়ানমার থেকে ইয়াবার একটি বড় চালান পাচারের গোপন সংবাদ পেয়ে নাফ নদের হ্নীলা পয়েন্টে বিজিবি অভিযান চালিয়ে ৪ লাখ ৫০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করে। একই দিন সকালে আরেক অভিযান চালিয়ে ২ লাখ ৫৫ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর মাঝিরঘাট খুরুশকুল ব্রিজসংলগ্ন ফুটবল মাঠ এলাকায় র্যাব সদস্যরা অভিযান চালিয়ে এই পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করেন। এ ছাড়া বিজিবি কক্সবাজার রিজিয়নের আওতাধীন সেক্টর ও ব্যাটালিয়গুলো গত এক বছরে সীমান্তে অভিযান পরিচালনা করে ১ কোটি ৬ লাখ ৯৪ হাজার ইয়াবা, ৫৮ কেজি ক্রিস্টাল মেথ আইস, ৩১ কেজি গাঁজা, ১ হাজার ৫৭৯ বোতল মদ ও ৫৩ বোতল ফেনসিডিল জব্দ করেছে।