ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত রংপুরে জাতীয় পার্টির মাটি সরে যেতে বসেছে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর জাতীয় পার্টির গায়ে তকমা লেগেছে স্বৈরাচারের দোসরের। এ অবস্থায় দলটি আসন্ন নির্বাচনে কতটুকু কী করতে পারবে এ নিয়ে চলছে জল্পনাকল্পনা। মাঠে নেই কোনো বড় মাপের নেতা। একসময় রংপুুর বিভাগের ২২টি আসন তাদের দখলে থাকলেও বর্তমানে অস্তিত্বসংকটে দলটি।
মাঠ পর্যায়ে খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, জাতীয় পার্টি নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে দলের নেতা-কর্মীরা এক প্রকার ঝিমিয়ে পড়েছেন। ৫ আগস্টের পর দলীয় কার্যালয়ে একাধিক সভাসমাবেশ করলেও এক মাস থেকে মাঠে তাদের কোনো তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে না। নির্বাচনে দলটির ভূমিকা কী হবে এ নিয়ে নেতা-কর্মীদের মাঝে চলছে আলোচনা। তবে দলের শীর্র্ষ কয়েকজন নেতাকে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না কিছুদিন থেকে। তাঁরা আত্মগোপনে রয়েছেন। নিজেদের রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখছেন। এমনই শোনা গেছে নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে।
নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের মৃত্যুর পর দলটির জনপ্রিয়তায় ধস নামতে শুরু করে। রংপুর সদর আসনের এমপি জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে নিজ নির্বাচনি এলাকায় খুবই কম দেখা গেছে। নেতা-কর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের সঙ্গে খুব একটা সম্পর্ক ছিল না জাপা চেয়ারম্যানের। এ ছাড়া স্থানীয় নেতৃত্বের কারণেও জাপার জনপ্রিয়তা হোঁচট খেতে থাকে। বর্তমানে কোনো ইস্যু নিয়ে জাতীয় পার্টিকে মাঠে দেখা যাচ্ছে না। ফলে ঘাঁটি থেকে জাতীয় পার্টির মাটি সরে যাচ্ছে-এমন মন্তব্য অনেককে করতে শোনা গেছে।
এদিকে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রংপুরে পাল্টে গেছে রাজনীতির প্রেক্ষাপট। জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। নিচ্ছেন নির্বাচনি প্রস্তুতি। কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় কর্মসূচি ঘিরে ব্যাপক শোডাউন করছে বিএনপি ও জামায়াত। বাম দলগুলো বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে কর্মসূচি পালন করলেও খুব একটা জনসমাগম দেখা যাচ্ছে না সেসবে। জেলা জাপার সদস্যসচিব হাজি আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘দলে কোনো বিভেদ নেই। আমাদেরও নির্বাচনের প্রস্তুতি রয়েছে।’