গাজীপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে হামলার অভিযোগে ৫৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী বলে দাবি পুলিশের।
গতকাল গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ, উত্তর) মো. রবিউল হাসান জানান, এখন পর্যন্ত (বেলা ৩টা) কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জিএমপির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে হামলার ঘটনায় ৫৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ ও যাচাইবাছাই করা হচ্ছে। বিশেষ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। জিএমপি সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সন্ধ্যায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে হামলা ঘটে। গাড়িচালকের ভাষ্যমতে দুর্বৃত্তরা পেছন থেকে মোটরসাইকেলে এসে গাড়িতে হামলা করে। এতে গ্লাস ভেঙে হাসনাত আবদুল্লাহর ডান হাত রক্তাক্ত জখম হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে এলাকায় ব্যাপক অভিযান চালিয়ে গতকাল সকাল পর্যন্ত ৫৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
হাসনাতের ওপর হামলা করেছে ছাত্রলীগ : এনসিপি
জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর ওপর হামলা করেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত ফ্যাসিবাদী ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ। রবিবার সন্ধ্যায় গাজীপুরের চৌরাস্তা এলাকায় তার ওপর এই হামলা চালানো হয়। এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, এই হামলার আগের দিন শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিষিদ্ধ ঘোষিত ফ্যাসিবাদী ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী হাসনাত আবদুল্লাহকে ‘দেখে নেওয়া’র এবং হামলার হুমকি দিয়েছিল। আমরা আরও উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করেছি, প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাফ্যাক্ট’-এর জরিপে উঠে এসেছে যে, গত ৯ মাসে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে জড়িত ব্যক্তি ও পরিবারের ওপর ৩৬টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। যাতে ৮৯ জন আহত এবং একজন শহীদ হয়েছেন। তার পরও এসব হামলাকারীর এবং জুলাই অভ্যুত্থানের ছাত্র-জনতার হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনতে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে ত্বরিত ও কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
গাজীপুরে মামলা : হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে হামলার ঘটনায় গাজীপুরের বাসন থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। এতে ১০০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) বাসন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহীন খান। তিনি জানান, হাসনাত আবদুল্লার গাড়িতে মামলার ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যায় বাসন থানায় একটি মামলা হয়েছে। এনসিপির কর্মী আল আমিন খন্দকার বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
এতে ১০০ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে। মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয়েছে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১৪ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. আলমগীর হোসেন রাব্বিকে। এ ছাড়া হুকুমের আসামি করা হয়েছে সাবেক মন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে। অপর আসামিদের পরিচয় জানা যায়নি।