বিল না পেয়ে সব উন্নয়ন কাজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) ঠিকাদাররা। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় নগরীর সপুরা এলাকায় রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কে সমাবেশ করে তারা এ ঘোষণা দেন।
এ সময় ঠিকাদাররা দাবি করেন, ঠিকাদারদের বিলের প্রায় ২৫০ ফাইল আড়াই মাস ধরে টেবিলে ফেলে রেখেছেন সিটি করপোরেশনের সচিব রুমানা আফরোজ। এতে ১৫ জন ঠিকাদারের প্রায় ১০০ কোটি টাকা আটকে আছে। পাওনা টাকা না পেয়ে তারা শ্রমিকের মজুরি দিতে পারছেন না। এ অবস্থায় কাজ বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। সমাবেশে ঠিকাদার রেজাউল করিম বলেন, ‘গত ২০ জুলাই আমরা সংবাদ সম্মেলন করে বিল ছাড় করতে অনুরোধ জানিয়েছিলাম। এরপরও কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আমাদের সঙ্গে আলোচনারও প্রয়োজন বোধ করেননি। ফলে আমাদের এখন কাজ বন্ধ করতে হচ্ছে।’
আগামী রবিবার শ্রমিক ও সরদারদের নিয়ে নগর ভবনের সামনে সমাবেশ করা হবে জানিয়ে ঠিকাদার সালাহউদ্দিন গাজী বলেন, ‘শহরে চারটি ফ্লাইওভার, ছয়টি কাঁচাবাজারসহ বেশ কিছু রাস্তার কাজ চলছে। আমরা মাসে মাসে বিল নিয়ে কাজ করি। কিন্তু নতুন প্রশাসন কোনো বিলই ছাড়ছে না। এ অবস্থায় শ্রমিকরা টাকার জন্য বাড়ির সামনে চলে আসছে। আমরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। তাই কাজ বন্ধ ছাড়া উপায় নেই।’
আরেক ঠিকাদার ও বিএনপি নেতা ইয়াহিয়া খান মিলু বলেন, ‘আড়াই মাস ধরে সচিব কোনো বিল ছাড়েননি। এতে জনগণের স্বার্থে ব্যাঘাত ঘটছে। জনগণই তো দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এ সচিব সময়মতো অফিসও করেন না। অফিস করেন রাতে। তিনি আওয়ামী লীগের দোসর। বিল আটকে রেখে জনদুর্ভোগ তৈরি করে তিনি দেশকে অস্থিতিশীল করতে চান।’
সমাবেশ শেষে ওই এলাকার ফ্লাইওভার নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি রাসেল ইসলাম। পাশাপাশি অন্য ঠিকাদাররাও তাদের সব কাজ বন্ধের ঘোষণা দেন। এ সময় ঠিকাদার হাফিজুল ইসলাম, বেলাল খানসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য নেই বলে জানিয়েছেন রাসিকের সচিব রুমানা আফরোজ। তবে বিল আটকে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘কোথায় ঠিকাদারদের ২৫০ ফাইল আটকে আছে জানি না। বিল আটকে থাকলে তো তারা আমাদের জানাতেন। আমাকে কেউ তো জানাননি।’