চট্টগ্রাম নগরীর রহমতগঞ্জে শতবর্ষী ঐতিহাসিক জে এম সেন ভবন সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। ১৮৯২-৯৩ সালে ভারতীয় কংগ্রেস নেতা যাত্রামোহন সেনগুপ্তের নির্মিত এ ভবন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল। চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহ, অসহযোগ আন্দোলন, বার্মা অয়েল কোম্পানির শ্রমিক আন্দোলন, চা শ্রমিকদের ‘মুল্লুক চলো’ আন্দোলন এবং আসাম বেঙ্গল রেল ধর্মঘটসহ নানা ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতি জড়িয়ে আছে এ বাড়ির সঙ্গে। চট্টগ্রাম ইতিহাস ও সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্র ভবনটি সংরক্ষণের আবেদন জানালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক নেতৃত্বাধীন একটি দল গত জুলাইয়ে বাড়িটি পরিদর্শন করে। এরপর কাঠামো, কক্ষ ও ভূমির পরিমাপ সম্পন্ন করে নকশা তৈরি করা হয়েছে। অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক মোছা. নাহিদ সুলতানা জানিয়েছেন, ভবনটি প্রত্নতাত্ত্বিক, ঐতিহাসিক ও স্থাপত্যিক গুরুত্বে সংরক্ষণযোগ্য। প্রতিবেদন তৈরি শেষে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে, সেখান থেকেই চূড়ান্ত ঘোষণা আসবে। বাড়িটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইতিহাসের বহু গুরুত্বপূর্ণ নাম। যাত্রামোহনের ছেলে দেশপ্রিয় ব্যারিস্টার যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত ছিলেন সর্বভারতীয় কংগ্রেস নেতা ও কলকাতার মেয়র। তাঁর স্ত্রী নেলী সেনগুপ্তা ছিলেন ইংরেজ নাগরিক ও পরবর্তীতে ভারতের কংগ্রেস নেত্রী। মহাত্মা গান্ধী, সুভাষ চন্দ্র বসু, শরৎ বসু, মোহাম্মদ আলী, শওকত আলীসহ বহু জাতীয় নেতা এ বাড়িতে আসেন। ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী সূর্য সেন, অনন্ত সিংহ ও অম্বিকা চক্রবর্তীর মামলায়ও পাশে দাঁড়িয়েছিলেন যতীন্দ্রমোহন। ১৯৩৩ সালে কারাগারে তাঁর মৃত্যু হয়। নেলী সেনগুপ্তা ১৯৭০ সাল পর্যন্ত এ বাড়িতেই বসবাস করেন। পরে বাড়িটি বেদখল হয়ে যায়। এখন সরকারের উদ্যোগে অবশেষে জেএম সেনের বাড়ি জাতীয় পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষণের পথে এগোচ্ছে।