বধির মানুষের শ্রবণশক্তি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য কানে পরিধেয় ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট সক্ষম হলেও এর বেশকিছু সমস্যা আছে। তবে সব ধরণের বধিরতার জন্য এটি ব্যবহার্য নয়। এ ছাড়া এটি অস্ত্রোপচার করে বসাতে হয় এবং খরচও প্রচুর। এর স্থানে আসতে পারে নতুন এক ডিভাইস যা জিহবার মাধ্যমে বধির মানুষদের শুনতে সাহায্য করতে পারে।
কলোরাডো স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা তৈরি করেছেন এই ডিভাইস। এর মাধ্যমে শ্রবণের অনুভূতি ফিরে আসে না বটে, তবে তা শব্দকে এমন ধরণের কম্পনে রূপান্তরিত করে যা জিহ্বার মাধ্যমে অনুভব করা যায়। এই প্রযুক্তি ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্টের চেয়ে সস্তা, এর জন্য কোনো অস্ত্রোপচারও দরকার হয় না। এটির ওপর আরও গবেষণার পর অনেক কম খরচে তৈরি করা সম্ভব হবে, এর দাম অবশ্যই ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্টের চেয়ে কম হবে। ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট বা হিয়ারিং এইড বিভিন্নভাবে কাজ করে। হিয়ারিং এইড শুধুমাত্র শব্দকে বাড়িয়ে দেয়, যেখানে ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট কানের ক্ষতিগ্রস্ত অংশকে পাশ কাটিয়ে সরাসরি অডিটারি নার্ভকে স্টিমুলেট করে। কিছুটা প্রশিক্ষণের পর ব্যবহারকারী বিভিন ধরণের শব্দ বুঝতে পারেন। নতুন ডিভাইসটিও অনেকটা এভাবেই কাজ করে। ব্লুটুথযুক্ত একটি ইয়ারপিস শব্দকে একটি প্রসেসরে পাঠায় যা শব্দকে একগুচ্ছ প্যাটার্নে রূপান্তরিত করে। এরপর জিহ্বায় ধরে রাখা একটি মাউথপিসে থাকা ইলেক্ট্রোড এগুলোকে কম্পন হিসেবে মস্তিষ্কে পাঠায়। এটি ব্যবহার করে কেউ কেউ বলেন, অনুভূতি অনেকটা শ্যাম্পেন পান করার ফলে জিহ্বায় সামান্য জ্বলুনির মতো।
মস্তিষ্ক এবং জিহ্বাকে একইসঙ্গে কাজ করার প্রশিক্ষণ দিতে পারলে এই ডিভাইস ব্যবহার করে শ্রবণের অনুভূতি গ্রহন করাটা সহজ হয়ে যায়। গবেষকরা জিহ্বাকে এক্ষেত্রে ব্যবহার করেন। কারণ জিহ্বায় প্রচুর পরিমাণে নার্ভ আছে আর এখান থেকে সিগন্যাল গ্রহণ করাটা মস্তিষ্কের জন্য সহজ। যে কারণে আঙ্গুলের ডগা ব্যবহার করে ব্রেইল পদ্ধতিতে বই পড়া সহজ, সে কারণেই জিহ্বা ব্যবহার করে শ্রবণের ব্যাপারটিও সহজ। জি নিউজ।
বিডি-প্রতিদিন/ ২২ জানুয়ারি, ২০১৫/ রোকেয়া।