প্রেমে বয়স কোন বাধা নয়। নেই কোন লজ্জাও। পরপারে গিয়েও পেতে চায় ভালোবাসার মানুষটিকে। আর এজন্যই নতুন করে ১০৩ বছর বয়সেও ভালোবাসার মানুষটির সঙ্গে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হলেন মানুয়েল রিয়েলা। যাঁর সঙ্গে মানুয়েল বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন, সেই মার্তিনা লোপেজের বয়সও নেহাত কম নয়। সেঞ্চুরি করতে আর মাত্র এক বছর বাকি। বয়সের ছাপ দেহেও পড়েছে। তবুও দু’জনের মনের প্রেমের রঙ ফিকে হয়ে যায়নি। তাই দীর্ঘ ৮০ বছরে যা করতে পারেননি, জীবনের অন্তিমলগ্নে গিয়ে সেই সাধই পূর্ণ করলেন প্যারাগুয়ের এই বৃদ্ধ-বৃদ্ধা।
বিয়ের পর এই নব দম্পতিকে দেখতে গির্জার সামনে ভিড় জমিয়েছিলেন অগণিত মানুষ। যদিও মানুয়েল-মার্তিনার প্রেমকাহিনী শুরু আট দশক আগে, ১৯৩৩ সালে। সেই বছর গোলাপ হাতে মার্তিনাকে প্রেম নিবেদন করেছিলেন মানুয়েল। সেই প্রেম প্রত্যাখ্যান করতে পারেননি মার্তিনা। তাই দেরি না করে ওই বছরই কাগজে-কলমে বিয়ে সেরে নেন এই প্রেমিক যুগল। তারপর মধুচন্দ্রিমাতেও যান। মধুচন্দ্রিমা সেরে আসার পরই ধর্মীয়ভাবে বিয়ে করবেন বলে ভেবেছিলেন এঁরা। কিন্তু মধুচন্দ্রিমার রেশ কাটতে না কাটতেই শুরু হয়ে যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। এর ফলে দু’জনে সংসার শুরু করলেও সাড়ম্বরে ধর্মীয়ভাবে বিয়ে করার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তারপর এঁদের জীবনে আসে আটটি সন্তান। তাদের বড় করার চিন্তায় অধরা স্বপ্ন পূরণের কথা ভুলেই গিয়েছিলেন এই দম্পতি। তবে এখন দু’জনের জীবনেই অখণ্ড অবসর। তাই তরুণ বয়সের সেই স্বপ্ন আর অপূর্ণ রাখতে চাননি তারা। ছোট্ট নাতির আবদারেই এই বয়সে সেই পুরনো স্বপ্ন পূরণ করার সাহস পেয়েছেন লোপেজ। তাঁর কথায়, ছোট্ট নাতিটার আবদারে আর না করতে পারিনি। নাতি-নাতনিরাও দাদু-ঠাকুমার বিয়ের দিনটির কথা ভুলতে পারছে না। রবিবার সকালে একেবারে নববধূর সাজেই সাদা গাউন পরে, হাতে ফুলের তোড়া এবং মুখে সলজ্জ হাসি নিয়ে গির্জায় প্রবেশ করেন লোপেজ। মানুয়েলও নতুন আকাশি শার্ট পড়ে, হাতে আংটি নিয়ে হুইলচেয়ারে করেই গির্জায় হাজির হন। দু’জনেরই মুখের চামড়া কুঁচকে গেছে। হাতে ফুলের তোড়া ধরারও যেন ক্ষমতা নেই। বয়সের ভারে ন্যুজ এই দম্পতি চেয়ারে বসেই বিয়েটা সারলেন। একসঙ্গে সংসার করার এত বছর পরও দু’জনের ভালোবাসায় এতটুকু ভাটা পড়েনি। তাই এই বয়সেও বিয়ের উত্তেজনা দু’জনের চোখে-মুখে ছিল স্পষ্ট। জি নিউজ।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫/ রোকেয়া।