প্রকৃতির ডাকে উন্মুক্ত জায়গায় সাড়া দেয় পৃথিবীর অধিকাংশ প্রাণি। এক্ষেত্রে তাদের গোপনীয়তা রক্ষার প্রয়োজন হয় না। ক্ষুদ্রকায় প্রাণী পিপড়ারও এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হয় না। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট তৈরি করে মানুষ। আমাদের ধারণা, একমাত্র বুদ্ধি ও বিবেকসম্পন্ন প্রাণি মানুষই প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গোপন জায়গা খুঁজে নেয়। কিন্তু এ ধারণা ভুল। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রকৃতির ডাকে টয়লেট ব্যবহার করে ক্ষুদ্রতম প্রাণি পিঁপড়াও। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার
পিঁপড়ার টয়লেট পদ্ধতির ওপর গবেষণা চালিয়েছে জার্মানির রেজেনসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক দল। গবেষক দলের নেতৃত্বে ছিলেন টমার ক্রেকজ্যাকস। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, পিঁপড়ার মধ্যেও অনেক আদব কায়দার ব্যাপার আছে। যেখানে সেখানে মলত্যাগ করে না তারা। নিজেদের বাসার নির্দিষ্ট স্থানে মলত্যাগ করে এই প্রাণিটি।
২০১৫ সালের ১৮ ফ্রেব্রুয়ারি ওপেন-অ্যাকসেস জার্নাল পোলস ওয়ানে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গোপন জায়গার আশ্রয় নেয় পিঁপড়ারা। ছোট্ট এই প্রাণি টয়লেট হিসেবে ঘরের কোণাকে ব্যবহার করে। নিজেদের ঘরে ২/১টি কোণা মলত্যাগের জন্য ব্যবহার করে পিঁপড়া। সেখানে অন্য কোনো আবর্জনা থাকে না। ওই কোণাগুলো মূলত তাদের টয়লেট। খাদ্যবর্জ্য, মৃতদেহ ও দেহাবশেষের মতো আবর্জনা বাসার বাইরে ফেলে দেয় পিঁপড়া।
গবেষণা থেকে আশ্চর্যজনক অারেকটি তথ্যও জানা গেছে। তা হলো, পিঁপড়ার খাবার এবং মলের রংয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। দুটি দেখতে অনেকটা একই রকম। গবেষণা দলের প্রধান টমার ক্রেকজ্যাকস বলেন, মানুষের মতোই দলবদ্ধভাবে বাস করে পিঁপড়া। স্যানিটেশন তাদের জন্য একটি বড় সমস্যা। পিঁপড়ার বাসা অনেক পরিষ্কার থাকে।
তবে পিঁপড়ার টয়লেট ব্যবহারের কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি গবেষকরা। তাদের ধারণা, এই বর্জ্য নির্দিষ্ট কোনো কাজে ব্যবহার করে তারা। এ প্রসঙ্গে ড. ক্রেকজ্যাকস বলেন, এমনও হতে পারে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের বাইরে যেতে চায় না পিঁপড়া। তাই ঘরের মধ্যেই টয়লেটের ব্যবস্থা রাখে এই ক্ষুদ্র প্রাণিটি।
বিডি-প্রতিদিন/২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫/শরীফ