কথায় বলে, বুদ্ধি থাকলে নাকি মাথার তেল বিক্রি করেও খাবার জোগাড় করা যায়। আর তার সঙ্গে যদি থাকে সাহস, তাহলে তো কথাই নাই। সেটাই প্রমাণ করলেন মুম্বাইয়ের ৮১ বছর বয়সী অশীতিপর বৃদ্ধা পুষ্পাবেন ধামজী ভল্লা। এই বয়সে বুদ্ধি আর সাহসের জোরে ধরে ফেললেন ছিনতাইকারী।
গত বুধবার সকাল ১০টার দিকে বাড়ির পাশের এক মন্দিরে যাবেন বলে বের হন। মুম্বাইয়ের দাদারের জি ডি আম্বেকার রোডের ল্যান্ডমার্ক টাওয়ারে তার ফ্ল্যাট। যখনই তিনি অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে বের হন, তার কাছে এগিয়ে আসে এক ব্যক্তি। নিজেকে পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিয়ে বলেন, তারা সাদা পোশাকে এলাকা পর্যবেক্ষণ করেন।
সেই ব্যক্তি পুষ্পাবেনকে জানান, তিনি যে এলাকায় থাকেন, তা একেবারেই নিরাপদ নয় এবং হাতে এতগুলো সোনার চুঁড়ি (আনুমানিক ৫০ হাজার টাকা মূল্য) পরে ঘুরে বেড়ানো মোটেই উচিত নয় তার। বয়সের ভারে শরীরে ভাটা পড়লেও, ভাটা পড়েনি তার বুদ্ধিতে। তাই সোনার চুঁড়ি খুলে দেওয়ার পরামর্শ শুনেই খটকা লাগে। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, চুঁড়ি তিনি খুলবেন না। নিজের খেয়াল তিনি নিজেই রাখতে পারবেন। এরই মধ্যে তিনি লক্ষ্য করেন কাছেই একটি ট্যাক্সিতে আরও দু'জন লোক বসে আছে। কোনওভাবেই রাজি করাতে না পেরে সেই ব্যক্তি জোর করে তার হাত থেকে চু়ড়ি খুলে নেওয়ার চেষ্টা করলে পুষ্পাবেন তার হাতের লাঠি দিয়ে পেটানো শুরু করেন ওই ব্যক্তিকে। সঙ্গে ভাঙা গলায় চিৎকার জুড়ে দেন। ব্যাস, কেল্লাফতে। তার আওয়াজ শুনে ছুটে আসেন কাছেই দাঁড়িয়ে থাকা এক সবজি বিক্রেতা। হইহট্টগোল শুনে এগিয়ে আসেন বেশ কিছু পথ চলতি মানুষ। সবাই মিলে ধরে ফেলেন ওই ব্যক্তিকে। জানা গেছে, তার নাম আলি রাজা আজিজ জাফরি, বয়স ৪৯ বছর। পরে আম্বিভ্লির বাসিন্দা আলি রাজাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মায়ের এই সাহসিকতা দেখে একই সঙ্গে অবাক এবং গর্বিত তার ছেলে হরেন্দর ভল্লা (৫৭) এবং পুত্রবধূ জ্যাসমিন (৫৭)। তারা জানান, জীবনে কোনওদিন কারও গায়ে হাত তোলেননি তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/ এস আহমেদ