নর্দার্ন রেলওয়ে তার কৃষিজমি অধিগ্রহণ করেছে। এই অভিযোগে ৪৫ বছরের এক কৃষক ভারতের লুধিয়ানায় আদালতের দ্বারস্থ হন। ক্ষতিপূরণ হিসাবে আদালত গত বুধবার তাকে আস্ত একটি ট্রেন প্রদান করল। যে সে ট্রেন নয়, অমৃতসর থেকে নয়াদিল্লি যাতায়াত করে যে স্বর্ণ শতাব্দী এক্সপ্রেস, এখন তার নতুন মালিক সম্পূরণ সিং।
আদালতের এই রায়ে ভারতবাসী কার্যত চমকে গিয়েছেন। নর্দার্ন রেলওয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কৃষকের জমি অধিগ্রহণ বাবদ ১ কোটি ৫ লাখ টাকা তারা দিতে পারেনি। তাই আদালত রেলের সম্পত্তি হিসাবে আস্ত একটি ট্রেন ওই কৃষককে দিয়ে দিল। শুধু ট্রেনই নয়, স্টেশন মাস্টারের অফিসটিও দেওয়া হয়েছে ওই কৃষককে। কিন্তু কাটানা গ্রামের কৃষক সম্পূরণ সিং এখন ওই ট্রেনটি নিয়ে কী করবেন, ভেবে পাচ্ছেন না।
বুধবার নির্ধারিত সময়ে স্বর্ণ শতাব্দী এক্সপ্রেস স্টেশনে পৌঁছাতেই সম্পূরণ সিং ও তার আইনজীবী রাকেশ গান্ধীও সেখানে পৌঁছে যান। আদালতের নির্দেশ মোতাবেক, ট্রেনের চালকের উপস্থিতিতে ৬.৫৫ মিনিটে সেকশন ইঞ্জিনিয়ার প্রদীপ কুমার ট্রেনটি আনুষ্ঠানিকভাবে ওই কৃষকের হাতে তুলে দেন। প্রায় ৫ মিনিট ধরে চলে এই হস্তান্তর প্রক্রিয়া।
সম্পূরণ সিং জানিয়েছেন, রেলের সঙ্গে তার দ্বন্দ্বের সূত্রপাত ২০০৭ থেকে৷। কৃষি অধিগ্রহণ বাবদ ওই কৃষককে ১.৪৭ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। কিন্তু রেল মাত্র ৪২ লাখ টাকা দেওয়ায় ২০১২-য় তিনি ফের আদালতের দ্বারস্থ হন। ২০১৫-র জানুয়ারির মধ্যে তার সমস্ত পাওনা মিটিয়ে দিতে হবে রেলকে, নির্দেশ দেয় আদালত। কিন্তু রেল সেই নির্দেশও মানতে ব্যর্থ হয়। এরপরই আদালত রেলের সম্পত্তি সম্পূরণ সিংয়ের হাতে স্বর্ণ শতাব্দী এক্সপ্রেস তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
যদিও ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার অনুজ প্রকাশ আশা করছেন, দ্রুতই ওই কৃষকের ক্ষতিপূরণ বাবদ মামলার সুষ্ঠু নিষ্পত্তি হবে। তার সহাস্য মন্তব্য, “৩০০ মিটার লম্বা ট্রেন নিয়ে অভিযোগকারী কী করবেন? বাড়ি নিয়ে যেতে পারবেন?”