প্রথম পর্যায়ের সিরাজগঞ্জের চারটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দু'টিতে আওয়ামী লীগ ও একটিতে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। উল্লাপাড়া উপজেলায় দুটি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত থাকায় চেয়ারম্যান পদে ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। তবে এ উপজেলায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী এগিয়ে রয়েছে।
রায়গঞ্জ উপজেলা:
রায়গঞ্জে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আইনুল হক দোয়াত-কলম প্রতীক নিয়ে ৭২ হাজার ৫০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের জিন্নাহ আলমাজি ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৭৬৯ ভোট। অপর প্রার্থী জামায়াত সমর্থিত এবিএম আব্দুস সাত্তার মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৭ হাজার ১৬ ভোট ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রইচ উদ্দিন জয়নাল আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৯০ ভোট।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থিত জাহিদুল ইসলাম টিউবওয়েল প্রতীকে ৬২ হাজার ১৮৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত খন্দকার শরিফুল ইসলাম টিয়া পাখি প্রতীকে পেয়েছেন ৪০ হাজার ৭২৯ ভোট। অপর প্রার্থী জামায়াত সমর্থিত অ্যাডভোকেড মনিরুল ইসলাম জাফর মাইক প্রতীকে পেয়েছেন ১৭ হাজার ১২৯ ভোট।
এছাড়া নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থিত শিউলী ইয়াসমিন প্রজাপতি প্রতীকে মোট ৫৩ হাজার ৬০৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী নিস্কৃতি দাস পদ্মফুল প্রতীকে পেয়েছেন ৩২ হাজার ৯৬৭ ভোট। অন্য প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত লিনা হক লুত্ফা কলস প্রতীকে ১১ হাজার ৫৩৩ ও নিলুফা ইয়াসমিন রিনা বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকে ৫৮১ ভোট পেয়েছেন। এই উপজেলার ৯২টি কেন্দ্রের মোট ২ লাখ ৪ হাজার ২০৯ জন ভোটারের মধ্যে ভোট প্রদান করেছে ১ লাখ ২৮ হাজার ৯২৫ জন।
কাজিপুর উপজেলা:
কাজিপুরে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মোজাম্মেল হক বকুল দোয়াত কলম প্রতীকে ১ লাখ ১১ হাজার ১৫০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আনারস প্রতীকে পেয়েছে ১৪ হাজার ৭৫ ভোট। অপর প্রার্থী বিএনপি সমর্থিত অ্যাডভোকেট রবিউল হাসান কাপ-পিরিচে প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৭৩৪ ভোট।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে আশরাফুল ইসলাম বেলাল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
এছাড়া নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী সুলতানা হক কলস প্রতীকে ৪৫ হাজার ৩৫৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সুফিয়া বেগম ফুটবল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৯ হাজার ১৬১ ভোট।
অন্যদের মধ্যে মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী জুঁই পারভীন হাঁস প্রতিকে ২৮ হাজার ৯৪২ ও রেহানা খাতুন সিলিংফ্যান প্রতীকে পেয়েছেন ১৪ হাজার ৩৫১ ভোট।
এ উপজেলার ১১৪টি কেন্দ্রের মোট ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন ভোটারের মধ্যে ভোট প্রদান করেছে ১ লাখ ২৮ হাজার ৯৫৯ জন।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা:
সিরাজগঞ্জ সদরে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী রিয়াজ উদ্দিন আনারস প্রতীকে ৯৩ হাজার ১০৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত মজিবুর রহমান লেবু দোয়াত-কলম প্রতীকে পেয়েছে ৭৩ হাজার ৮৭০ ভোট।
অপর প্রার্থী জামায়াত সমর্থিত শহিদুল ইসলাম কাপ-পিরিচে প্রতীকে পেয়েছেন ৩০ হাজার ৪৩৮ এবং ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন সমর্থিত মুফতী মুহিবুল্লাহ মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ২৮৪ ভোট।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থিত ভিপি শামীম ৮২ হাজার ৯১৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত গাজী আমিনুল ইসলাম ৩১ হাজার ১৫৭ ভোট পেয়েছে।
অপর প্রার্থীদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াত আলী মুন্সি চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ২৫ হাজার ০২৯ ভোট, জাসদ সমর্থিত নাজমুল ইসলাম মুকুল তালা প্রতীকে পেয়েছেন ২৪ হাজার ৫৬, স্বতন্ত্র নাছিমুর রেজা নুর দিপু টিউবওয়েল প্রতীকে পেয়েছেন ২৩ হাজার ৭০২ ভোট, মাইক প্রতিক নিয়ে দিলীপ গৌর পেয়েছেন ৩ হাজার ৯৬০ ভোট ও রাশেদুজ্জামান মিয়া বই প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৮৫০ভোট।
এছাড়া নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থিত সাবিনা ইয়াসমিন হাসি কলসি প্রতিকে ১ লাখ ৪ হাজার ৪২৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত নূরুন্নাহার খানম সিলিংফ্যান প্রতীকে পেয়েছেন ৮৩ হাজার ১৭৮ ভোট।
এ উপজেলার ১৪৮ কেন্দ্রের মোট ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৭৮৮জন ভোটারের মধ্যে ভোট প্রদান করেছে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৭৬৯ জন।
উল্লাপাড়া উপজেলা:
উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ১২১টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১১৯টি কেন্দ্রের ফলাফলে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট মারুফ বিন হাবিব ঘোড়া প্রতীক নিয়ে ৮৮ হাজার ৩৯৮ ভোটে পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত প্রার্তী অ্যাডভোকেট শামসুল হক মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৮২ হাজার ৬১৯ ভোট। অপর প্রার্থী জামায়াত সমর্থিত অ্যাডভোকেট জাহিদ হোসাইন আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২৫ হাজার ৫৯৭ ভোট ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুজ্জামান মাহফুজ দোয়াত-কলম প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৬২২ ভোট ও জাতীয় পার্টি (এরশাদ) সমর্থিত জয়নাল আবেদিন টেলিফোন প্রতীকে পেয়েছে ৫০২ ভোট।
এ উপজেলায় মোট ১২১টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে। তবে ব্যালট বাক্স পোড়ানো এবং অনিয়মের অভিযোগে দুইটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়েছে। দুটি কেন্দ্রে পুনরায় ভোটগ্রহন শেষে চেয়ারম্যান পদে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
তবে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াত সমর্থিত শাহজাহান আলী তালা প্রতীকে ১ লাখ ৪ হাজার ৬৯৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিবাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত সোহেল রানা চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ৭০ হাজার ৬৭২ ভোট।
অপর প্রার্থীদের মধ্যে বিএনপি সমর্থিত আব্দুস সালাম বৈদ্যুতিক বাল্ব প্রতীকে ১৮ হাজার ৮৩৩ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ টিউবওয়েল প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ১৯২ ভোট ও উড়োজাহাজ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী একরামুল ফয়সাল শিবলু পেয়েছেন ৪৩৮ ভোট।
এছাড়া নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে পদ্মফুল প্রতীকে মোট ১ লাখ ১১ হাজার ২৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মনিজা মোমেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত আফরোজা ইয়াসমিন লিপি হাঁস প্রতীকে পেয়েছেন ৭১ হাজার ৬৩২ ভোট।
জেলা রিটার্নিং অফিসার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কে এম আলী আযম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, উল্লাপাড়ার স্থগিত দুটি ভোটকেন্দ্র পুনরায় ভোটগ্রহণ শেষে চেয়ারম্যান পদের ফলাফল ঘোষণা করা হবে।