তিন সিটি নির্বাচনে সব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে আগামী ২৯ মে তারিখের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে হবে বলে জানানো হয়েছে। অন্যথায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে সর্বোচ্চ সাত বছরের জেল বা প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হতে পারে।
ইসি সূত্রে খবর, গেজেট প্রকাশের তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে সব প্রতিদ্বন্দ্বী (বিজয়ী ও বিজিত) প্রার্থীকে নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দাখিল করতে হবে। অর্থাৎ আগামী ২৯ মের মধ্যেই হিসাব জমা দিতে হবে। এ বিষয়ে ইসির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে প্রার্থীদের সতর্ক করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আবারও দেওয়া হবে।
নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, মেয়র প্রার্থীরা ২০ লাখ ভোটার এলাকার জন্য সর্বোচ্চ দেড় লাখ এবং ২০ লাখের বেশি ভোটার এলাকার জন্য সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা ব্যক্তিগতভাবে খরচ করতে পারেন। এছাড়া নির্বাচনী ব্যয় হিসেবে ২০ লাখ ভোটারের জন্য সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা এবং ২০ লাখের বেশি ভোটার এলাকার জন্য সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারেন। এক্ষেত্রে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র প্রার্থীরা ব্যক্তিগত খরচসহ সর্বোচ্চ ৫৫ লাখ টাকার ব্যয়ের সুবিধা পেয়েছেন। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের মেয়র প্রার্থীরা পেয়েছেন সর্বোচ্চ ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ের সুবিধা।
অন্যদিকে, কাউন্সিলর প্রার্থীরা অনধিক ১৫ হাজার ভোটার এলাকার জন্য সর্বোচ্চ এক লাখ ১০ হাজার টাকা, ১৫ হাজার ১ থেকে ৩০হাজার ভোটার এলাকার জন্য সর্বোচ্চ দুই লাখ ২০ হাজার টাকা, ৩০ হাজার এক থেকে ৫০ হাজার ভোটার এলাকার জন্য সার্বোচ্চ চার লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং ৫০ হাজার এক থেকে তার বেশি ভোটার এলাকার জন্য সর্বোচ্চ ছয় লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করতে পারেন।
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী, প্রার্থীকে প্রত্যেক দিনের ব্যয়ের সব বিলের কপি, ব্যাংক থেকে উত্তোলিত অর্থের হিসাব বিবরণী, ব্যক্তিগত খরচের মোট হিসাব প্রভৃতি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। এক্ষেত্রে বিজয়ীদের গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যেই হিসাব জমা দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রার্থীর ব্যয়ের হিসাবের একটি কপি ইসিতে জমা দেবেন। অন্যটি নিজের অফিসে এক বছর সংরক্ষণ করবেন। যা ১০০ টাকা পরিশোধ করে যে কোনো ব্যক্তি দেখতে পারবেন। কেউ চাইলে প্রতি পৃষ্ঠার জন্য ৫ টাকা পরিশোধ করে ব্যয়ের হিসাব সংগ্রহও করতে পারবেন। এছাড়া প্রার্থীদের ব্যয়ের হিসাব ইসির ওয়েব সাইটে প্রকাশ করার কথা বিধিমালায় বলা হয়েছে।
বিধি অনুযায়ী, প্রার্থীর দাখিল করা ব্যয়ের হিসাব দেখে কোনো অসঙ্গতি মনে হলে যে কোনো প্রার্থী নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে পারেন। এক্ষেত্রে অভিযুক্ত প্রার্থীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হলে ট্রাইব্যুনাল তার নির্বাচন বাতিলও করতে পারেন।
নির্বাচন বিধিমালায়, প্রার্থীর ব্যয়ের হিসাব দাখিল সংক্রান্ত কোনো বিধান লঙ্ঘন হলে ন্যূনতম ছয়মাস থেকে সর্বোচ্চ সাত বছরের জেল বা প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলেরও বিধান রয়েছে।
সদ্য সমাপ্ত তিন সিটি নির্বাচনে ৪৮ জন মেয়র প্রার্থী ও ১১৩২ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) তিন মেয়রসহ বিজয়ী ১৭৯ কাউন্সিলর পদে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।
বিডি-প্রতিদিন/ ০২ মে, ২০১৫/ রশিদা