ভোট ছাড়া ঘোষিত নতুন ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের পক্ষে ও বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি সমাবেশসহ মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির পূর্বঘোষিত বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) বাধা প্রদানকে কেন্দ্র করে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে জাতীয় প্রেসক্লাব।
আজ শনিবার সকাল থেকে প্রেসক্লাবের ভিতরে ও বাইরে সরকার ও বিরোধী দল সমর্থক সাংবাদিকদের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ছাড়াও পুরনো ব্যবস্থাপনা কমিটির ডাকা ইজিএমকে কেন্দ্র দুই পক্ষের নেতাদের মধ্যে প্রথমে তর্কাতর্কি ও পরে ধাক্কাধাক্কি হয়। সরকারি দল সমর্থিত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস আফ্রাদ ও বিরোধী দল সমর্থিত নেতা মীর হোসেন মীরুর মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনাটি ঘটে। তবে শেষ পর্যন্ত উপস্থিত অন্য সাংবাদিক নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এর আগে সমঝোতা কমিটির সমর্থিত হিসেবে পরিচিত কয়েকজন সদস্য মেম্বারস লাউঞ্জে ইজিএম অনুষ্ঠানে আপত্তি জানালে উত্তেজনা পরিস্থিতির শুরু হয়। তবে শেষ পর্যন্ত বিকেল চারটার দিকে মিলনায়তনের পরিবর্তে প্রেসক্লাব মেম্বারস (টেলিভিশন) লাউঞ্জে এই ইজিএম অনুষ্ঠিত হয়।
মেয়াদোত্তীর্ণ ব্যবস্থাপনা কমিটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান কাজী রওনাক হোসেনের সভাপতিত্বে ইজিএম-এ আগামী এক মাসের মধ্যে ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনী তফশীল ঘোষণাসহ তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। একই সঙ্গে বিনা ভোটের নতুন কমিটিকে বহিষ্কারসহ বিতাড়নের সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়। জাতীয় প্রেসক্লাবের প্রায় দুই শতাধিক স্থায়ী সদস্য এতে অংশ নেন। বিকেল তিনটায় ইজিএম শুরু হবার কথা থাকলেও সরকারি দল সমর্থকদের বাধার কারণে সভার স্থান পরিবর্তনসহ তা এক ঘন্টা বিলম্ব হয়।
প্রেসক্লাব টেলিভিশন লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত ইইজএম-এ বার্ষিক রিপোর্ট পেশ করেন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ। এছাড়াও সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, রুহুল আমিন গাজী, এমএ আজিজ, আব্দুস শহিদ, আবদুল হাই শিকদার, ফরিদ হোসেন, ড. রেজওয়ান সিদ্দিকী, কবি আল মুজাহিদী, রফিক হাসান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
তবে এর প্রতিবাদে সমঝোতা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী এই ইজিএমের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে একে আদালত অবমাননার শামিল বলে উল্লেখ করেন। আজ এক বিবৃতিতে তারা বলেন, ক্লাবের সাধারণ সদস্যদের আপত্তির মুখে মেয়াদ উত্তীর্ণ সাবেক ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদসহ কিছু সদস্য অপরাহ্নে ক্লাবের টেলিভিশন লাউঞ্জে বসে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের নামে ক্লাবের শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করার অপচেষ্টা চালায়। তাদের সঙ্গে কিছু বহিরাগতও ক্লাবের লাউঞ্জে ঢুকে পড়ে এবং বিভিন্নভাবে উস্কানি দিতে থাকলেও ক্লাব কর্তৃপক্ষ চরম ধৈর্যের পরিচয় দেন। নেতৃদ্বয় সতর্ক করে বলেন, কর্তৃপক্ষের ধৈর্যকে দুর্বলতা মনে করলে ভুল করা হবে।
এর আগে সকালে বিক্ষুব্ধ সাংবাদিকদের ব্যানারে প্রেসক্লাবের সদস্যপদের দাবিতে সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা। তাদেরকে জয় বাংলা স্লোগান দিতে দেখা যায়। একই সঙ্গে আগামী ১৫ আগস্টের আগেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল স্থাপনেরও দাবি করা হয়।
অন্যদিকে ইউনিয়ন অফিস বন্ধের পাঁয়তারার বিরুদ্ধে সমাবেশ করে বিএনপি সমর্থিত সাংবাদিকরা। তারা শ্লোগান দেয়, ‘দখলদার হটাও, প্রেসক্লাব বাঁচাও’। এসময় তারা মুক্তিযুদ্ধ প্রজম্ম লীগের ‘ক্যাডার’সহ বহিরাগত সন্ত্রাসীদের প্রেসক্লাবের ভিতরে প্রবেশ করানো এবং সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে তালা লাগানোর প্রচেষ্টার নিন্দা জানান।