রাজধানীর মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের একাংশের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার সকালে ফ্লাইওভারের ডব্লিউ-ফোর নামের অংশটি উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রকল্প পরিচালক নাজমুল আলম জানিয়েছেন, নির্মাণাধীন মগবাজার-মৌচাক পুরো ফ্লাইওভার তিন ধাপে চালু হওয়ার কথা রয়েছে। প্রথম ধাপে আজ বুধবার ফ্লাইওভারটির একাংশ হলি ফ্যামিলি থেকে সাতরাস্তা যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা রয়েছে। এরপর দ্বিতীয় ধাপে আগামী ৩০ জুন ডব্লিউ-সিক্স বা বাংলামোটর-মগবাজার অংশ উন্মুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে। আর শেষ ধাপে ডব্লিউ-ফাইভ বা শান্তিনগর-মালিবাগ-রাজারবাগ অংশ আগামী ১৬ ডিসেম্বর উন্মুক্ত করে দেওয়া হতে পারে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পুরো প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যে ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। জানতে চাইলে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের প্রকল্প পরিচালক বাংলাদেশ প্রতিদিনের এ প্রতিবেদক বলেন, প্রকল্পের একটি অংশ আজ যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। বাকি কাজ আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফ্লাইওভারের কাজ শেষ করতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত এ প্রকল্পের আরেক দফা সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। সেতু বিভাগ এখনো আবেদনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। বরং নির্ধারিত সময় চলতি বছর ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। কারণ সময় বাড়ালে নির্মাণ ব্যয় আরও বাড়বে। সর্বশেষ সংশোধিত ব্যয় অনুযায়ী প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২১৮ কোটি টাকা। প্রথম দিকে ডিপিপি অনুমোদনের সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪৪৬ কোটি টাকা। পরবর্তীতে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৭২ কোটি টাকায়। আর তৃতীয়বার সংশোধনী এনে ধরা হয়েছে ১ হাজার ২১৮ কোটি টাকা।
সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় কিছু বাড়তি কাজ করতে হচ্ছে। যে কারণে সময় ও ব্যয় বেড়েছে। এফডিসি গেটের পরিবর্তে ফ্লাইওভারটি সোনারগাঁও হোটেলের কাছাকাছি পর্যন্তও বাড়বে। এ ছাড়া নকশা, পরামর্শক ও অতিরিক্ত পাইলিংয়ের জন্য খরচ ও সময় বেশি লাগছে। সংশোধিত প্রকল্প অনুযায়ী সাতরাস্তা, এফডিসি, মগবাজার, মৌচাক, শান্তিনগর, মালিবাগ রোড এবং মগবাজারসহ মালিবাগের দুটি রেলক্রসিংয়ের যানজট নিরসনই এর প্রধান উদ্দেশ্য। নতুনভাবে এটি সোনারগাঁও হোটেলের সামনে পর্যন্ত সংযুক্ত হতে যাচ্ছে। প্রকল্প এলাকায় সরেজমিন দেখা গেছে, দিন-রাত কাজ করছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। তবে প্রকল্প এলাকায় যত্রতত্র, ইটবালু, রডসহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে দেখা গেছে। প্রকল্প এলাকার সব রুটেই রাস্তা ছোট হয়ে যাওয়ায় এবং অব্যবস্থাপনার কারণে যান ও মানুষ চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। এতে এলাকাবাসীসহ পথচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অন্যদিকে ফ্লাইওভার চালু হলেও এর নিচের রাস্তা কারা মেরামত করবে আর তা কতটুকু গাড়ি চলাচল উপযোগী থাকবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় নাগরিকরা। এর মধ্যে ডব্লিউ ফোর বা তেজগাঁও সাতরাস্তা থেকে মগবাজার হয়ে হলি ফ্যামিলি পর্যন্ত অংশের কাজ এগিয়েছে সবচেয়ে দ্রুত। এখন চলছে শেষ সময়ের কিছু কাজ। লাগানো হয়েছে বৈদ্যুতিক বাতি। কাজের মধ্যে শুধু হাতিরঝিলের কাছে ফ্লাইওভারে ওঠার র্যাম্পটির সংযোগ পয়েন্টে কার্পেটিংয়ের কিছু কাজ বাকি। তবে সেটিও শেষ হওয়ার কথা রয়েছে আজ। এর বাইরে ফ্লাইওভারের তেজগাঁও কিংবা মগবাজার অংশ গাড়ি ওঠা-নামার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।
বিডি-প্রতিদিন/ ৩০ মার্চ, ২০১৬/ রশিদা