মিয়ানমারের অনুপ্রেবশকারী নাগরিক রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের জন্য দ্বি-পাক্ষিক, আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
জাতীয় সংসদে মঙ্গলবার প্রশ্নোত্তর পর্বে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য বেগম পিনু খানের লিখিত প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে বিদ্যমান সাম্প্রদায়িক অস্থিতিশীলতা, মিয়ানমার সরকারের মুসলিম বিরোধী অভ্যন্তরীণ নীতিমালা এবং ওই অঞ্চলের প্রতিকূল আর্থ-সামাজিক সমস্যার কারণে কয়েক দফায় মিয়ানমারের মুসলিম জনগোষ্ঠী সীমান্ত পেরিয়ে কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে ৩৩ হাজারের অধিক রেজিস্টার্ড শরণার্থী বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক হাইকমিশন পরিচালিত দুটি রেজিস্টার্ড ক্যাম্পে এবং তিন লাখের অধিক অনিবন্ধিত মিয়ানমার নাগরিক বিভিন্ন অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। সম্প্রতি আরও ৬৭ হাজার মিয়ানমার নাগরিক বাংলাদেশে অনুপ্রবেশে করেছে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বসহ সকল অধিকার নিশ্চিতকল্পে চাপ প্রয়োগের জন্য জাতিসংঘ, ওআইসির পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ জোরদার করা হয়েছে। এ ছাড়া মিয়ানমারের বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার যাতে এই সমস্যার সমাধান করে সেজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে মিলিতভাবে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, মিয়ানমার থেকে আগত অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে একটি যৌথ বিবৃতি স্বাক্ষরিত হয়। ওই চুক্তির আলোচনায় এবং এর স্বাক্ষর প্রক্রিয়ায় পেশাগত কারণে আমি সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলাম। এই চুক্তির ফলশ্রুতিতেই ইউএনএইচসিআর’র সহযোগিতায় সে সময় ২ লাখ ৩৬ হাজার ৫৯৯ জন অবৈধ অনুপ্রবেশকারীকে মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তন করা সম্ভব হয়েছিল। পরবর্তীতে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে আমরা টাস্কফোর্সের সমন্বয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের নাগরিকদের প্রত্যাবর্তনের জন্য দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করেছি।
বিডি-প্রতিদিন/৩১ জানুয়ারি, ২০১৭/মাহবুব