রাজধানীর বনানীতে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা নিতে পুলিশের গড়িমসি এবং আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক।
মঙ্গলবার বিকালে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশনের আয়োজিত এক মুক্ত আলোচনা সভায় তিনি এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করে কাজী রিয়াজুল হক বলেন, “দুই ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে ৪ মে বনানী থানায় মামলা করতে গেলে তাদের দুই দিন ঘোরায় পুলিশ। এমনকি মেয়ে দুটির চরিত্র হনন করা হয়েছে। একটি মামলা নিতে দুই দিন লাগে। তাহলে এই পুলিশের প্রয়োজন কী আমাদের?”
তিনি আরও বলেন, “পুলিশের গাফলতি ও নিষ্ক্রিয়তার কারণে ধর্ষণ মামলার আসামি যুবকরা ধরা পড়েনি। জনগণের টাকায় প্রতিপালিত পুলিশের এ আচরণ কোনোভাবেই সহ্য করা যায় না।”
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, অভিযোগ দায়েরের সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ সক্রিয় হলে আসামিদের গ্রেফতার করা সম্ভব হতো। পুলিশ এখন বলছে আসামিদের পাওয়া যাচ্ছে না। এখনো যদি পুলিশ চেষ্টা করে তাহলে আসামিদের গ্রেফতার করা সম্ভব বলেও মনে করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “বনানীর মতো অভিজাত এলাকায় একটি চারতারকা মানের হোটেলে নিয়ে দুজন মেয়েকে পালাক্রমে ধর্ষণ করা হলো, আর পুলিশ কিছুই জানে না। অথচ এ হোটেলে কে আসছে, কে যাচ্ছে সব কিছুই পুলিশের নখদর্পনে থাকে। যাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তারা প্রভাবশালী ও বিত্তশালী হয়েও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন ঘটিয়েছে।”
এর আগে, গত ২৮ মার্চ জন্মদিনের পার্টিতে আমন্ত্রণ করে ওই দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গত শনিবার রাতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। এতে সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ, বিল্লাল হোসেন, সাদনান ও সাকিফ নামের ৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, জন্মদিনের পার্টিতে দাওয়াত করে হোটেলে নেওয়ার পর সাফাত ও নাঈম হোটেলের একটি কক্ষে নিয়ে রাতভর দুই তরুণীকে আটকে রেখে মারধর এবং হত্যার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। আসামিদের অপর তিনজন ধর্ষণে সহায়তা ও ভিডিও ধারণ করে।
বিডি-প্রতিদিন/১০ মে, ২০১৭/মাহবুব