শিরোনাম
- টেস্ট থেকে অবসরের ঘোষণা রোহিত শর্মার
- দেশে প্রথমবারের মতো দুইটি ‘জলাভূমি নির্ভর প্রাণী অভয়ারণ্য’ ঘোষণা
- পাকিস্তানে ভারতের হামলা ‘সর্বাত্মক যুদ্ধের’ ঝুঁকি বাড়িয়েছে: তুরস্ক
- পুলিশের ৯ অতিরিক্ত ডিআইজিকে বদলি
- পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনার মধ্যেও চলবে পিএসএল
- রৌমারী-ভূরুঙ্গামারী সীমান্তে ৩৬ রোহিঙ্গা ও ৮ বাংলাদেশিসহ আটক ৪৪
- পাকিস্তানের হামলায় ভারতে হতাহত বেড়ে ৫৮: ভারতীয় সেনাবাহিনী
- 'শব্দদূষণ রোধে জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই'
- পানি সংকটে রাঙামাটি, বন্ধ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের চার ইউনিট
- সাফ অনূর্ধ্ব-১৯: ভারতে উত্তেজনার মাঝেও নির্ধারিত সূচিতেই মাঠে নামছে বাংলাদেশ
- আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধের ঘোষণা মোদির
- কারাগারের দেয়াল টপকে হাজতির পালানোর চেষ্টা, ভিডিও ভাইরাল
- নতুন ১৮ ওয়ার্ডের উন্নয়নে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ: ডিএনসিসি প্রশাসক
- খোদ ভারতেই যুদ্ধবিরোধী কণ্ঠ: কবীর সুমনের তীব্র প্রতিক্রিয়া
- ধর্মশালা থেকে সরিয়ে নেওয়া হল পাঞ্জাব বনাম মুম্বাই ম্যাচ
- হামলায় অংশ নিয়েছিল ৭৫ থেকে ৮০টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান, দাবি পাকিস্তানের
- ভারতের হামলায় ‘শান্তির আহ্বান’ বিশ্বনেতাদের, ইসরায়েল জানাল সমর্থন
- পাক-ভারত সংঘাত : সীমান্ত জেলাগুলোতে পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশ
- রাজধানীতে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ১৯৩৮ মামলা
- যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের খবর নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ার লুকোচুরি
বরাদ্দ কমালে শান্তিরক্ষা বাধাগ্রস্ত হবে: প্রধানমন্ত্রী
রুহুল আমিন রাসেল ও কাজী শাহেদ, নিউইয়র্ক থেকে
অনলাইন ভার্সন

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বরাদ্দ না কমানোর আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বরাদ্দ কমানো হলে তা বিশ্বের বিরোধপূর্ণ এলাকাগুলোতে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যকে বাধাগ্রস্ত করবে। এজন্য বিশ্বনেতাদের সতর্ক করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে খরচ এবং কর্মীর সংখ্যা কমালে তা শান্তি মিশনের কাজে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। শান্তিরক্ষায় সামনের সারিতে যারা কাজ করছে; তাদের উদ্বেগের বিষয়টি আবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে শুনতে হবে। সংঘাতপ্রবণ এলাকার মানুষের জান মাল রক্ষার পাশাপাশি শান্তি ফিরিয়ে আনতে ভূমিকার জন্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের ভূমিকা বরাবর প্রশংসা পেলেও বাজেট স্বল্পতার কারণে শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা ও তাদের কর্মক্ষমতায় অনেক ক্ষেত্রে ঘাটতি তৈরি হচ্ছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের উদ্যোগে ‘অ্যাকশন ফর পিস কিপিং’ শীর্ষক ওই বৈঠকে শান্তি মিশনের গুরুত্ব তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিশ্বের মানুষের মঙ্গলের জন্য। সুতরাং এ কার্যক্রমের মর্যাদা রক্ষায় অবশ্যই ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে। বহু মানুষের জীবনে জাতিসংঘের এই শান্তিরক্ষা কার্যক্রম আশার আলোকবর্তিকা; তাই এটাকে আমাদের অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শান্তিরক্ষীদের এমন সব জায়গায় পাঠানো হয়; যেখানে অশান্তি বিরাজ করছে। সেখানে তাদের নানা ধরনের অরাজকতা ও হুমকির মোকাবিলা করতে হয়। বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন মানের সেনা সদস্যরা শান্তিরক্ষা মিশনে পাশাপাশি কাজ করেন। এসব বিষয় শান্তিরক্ষা কার্যক্রমকে কঠিন ও বিপজ্জনক করে তোলে। এ কারণে শান্তিরক্ষীদের স্পষ্ট নির্দেশনা দিতে হবে। আর সেই দায়িত্ব পালনে তাদের যথেষ্ট কর্তৃত্ব এবং আধুনিক সরঞ্জামে সজ্জিত করতে হবে। মোতায়েনের ক্ষেত্রে তাদের দক্ষতা ও আন্তরিকতা বিবেচনায় নিতে হবে। তাদের নিরাপত্তা অবশ্যই বাড়াতে হবে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের দায়িত্ব নেওয়ার পর অ্যান্তোনিও গুতেরেস শান্তি মিশনে শান্তিরক্ষীদের প্রাণহানির উচ্চ হার দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করে অ্যাকশন ফর পিস কিপিং (এফোরপি) নামের এ উদ্যোগ নেন।
এফোরপি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের তাদের কাজের জন্য আরও উপযুক্ত করে তুলবে-এই প্রত্যাশা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, শান্তি মিশনের কার্যক্রম এগিয়ে নিতে সদস্য দেশগুলোকে তাদের যৌথ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হবে যথাযথভাবে। আর অর্পিত দায়িত্ব পালনে বাংলাদেশ সবসময়ই প্রস্তুত।
এই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শান্তি রক্ষায় জাতিসংঘের আহ্বানে সাড়া দিতে বাংলাদেশ কখনও ব্যর্থ হয়নি। শান্তিরক্ষায় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাদের অনেক শান্তিরক্ষীকে প্রাণ দিতে হয়েছে। তবু দায়িত্ব পালনে আমরা কখনও পিছ পা হইনি। এখন আমরা স্বল্পতম সময়ে আমাদের শান্তিরক্ষী মোতায়েন করতে পারি। যে কোনো চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির দ্রুত মোকাবিলা করার মত প্রশিক্ষণ তাদের দেওয়া হয়। যেখানে তারা যায়, মানুষের হৃদয় ও মন জয় করতেই তারা কাজ করে।
বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, নিজেদের নিরাপদ রাখার সক্ষমতা শান্তিরক্ষীদের থাকতে হবে। প্রয়োজনে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করার কাজটি তাদের করতে হবে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে মালিতে শান্তিরক্ষীদের সুরক্ষায় মাইন প্রতিরোধক যানবাহন সরবরাহ করার কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। ব্যক্তিগত আগ্রহে শান্তিরক্ষা মিশনে নারী সদস্যের সংখ্যা বাড়ানোর কথাও বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কঙ্গোতে প্রথম নারী হেলিকপ্টার পাইলট পাঠিয়েছি। এটি আমাদের জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। শান্তি মিশনে যৌন হয়রানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করে।
কিন্তু এর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প সরকার জাতিসংঘ ও শান্তি মিশনের জন্য বরাদ্দ কমিয়ে আনার পথে হাঁটছে। গতবছর যুক্তরাষ্ট্র শান্তিরক্ষা মিশনের মোট বাজেটের ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ দিতে রাজি হলেও ডিসেম্বরে তা ২৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার কমানোর ঘোষণা দেয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মঙ্গলবারও জাতিসংঘে তার বর্ক্তৃতায় বলেছেন, শান্তি মিশনের মোট বাজেটের ২৫ শতাংশের বেশি তার দেশ দিতে রাজি নয়।
যেসব দেশ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখছে, তাদের কথাতেও যে নিরাপত্তা পরিষদ ও জাতিসংঘ সচিবালয়ের আস্থা রাখা উচিত-সে বিষয়টি বিশ্ব নেতাদের মনে করিয়ে দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের দিক দিয়ে বাংলাদেশ আছে সামনের কাতারে। বর্তমানে বাংলাদেশের ৭ হাজার ৬৭ জন জাতিসংঘের বিভিন্ন শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিচ্ছেন, যার মধ্যে আছেন ১৬৬ জন নারী। ইথিওপিয়া ও রুয়ান্ডার পর বাংলাদেশ থেকেই সবচেয়ে বেশি শান্তিরক্ষী এখন বিভিন্ন মিশনে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৮৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় দেড়শ' বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী দায়িত্ব পালনের সময় নিহত হয়েছেন।
বিডি-প্রতিদিন/২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮/মাহবুব
এই বিভাগের আরও খবর