সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিসহ দেশের সকল জেলা বারে বিজয় ছিনিয়ে আনার মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনায় শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা। এ জন্য আইনজীবী সমিতিরগুলোর আগামী নির্বাচনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। সভায় বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে না এলে যেমন স্বাধীনতার পূর্ণতা পাওয়া যেত না, তেমনি স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তার কন্যা ফিরে না এলে এদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হতো না। রবিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ আয়োজিত এ সভায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্যদের মধ্যে থেকে পাঁচজন বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়ায় তাদেরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সংগঠনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনের সভাপতিত্বে ও সংগঠনের সদস্য সচিব শেখ ফজলে নূর তাপসের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, রেলপথমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ুন ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার, সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সারোয়ার জাহান বাদশা প্রমুখ।
সভায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, অল্প কিছু দিনের মধ্যে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল থেকে শুরু করে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল, পিপি, এপিপি, জিপি, এজিপিদের পদত্যাগ করতে অনুরোধ করা হবে। এরপর যারা যোগ্য ও ত্যাগী তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে অবশ্যই হাইব্রিডদের বাদ দেওয়া হবে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন। দেশে গণতন্ত্রকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন। এ জন্য আমাদের শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। এর প্রথম পদক্ষেপ হবে দেশের সকল বারে (আইনজীবী সমিতি) জয়লাভ করা। এজন্য আইনজীবীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে জাতি মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পূর্ণতা পেয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, সামনে কঠিন সময় আসছে, এ সময়ে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। ঐক্যের নামে ড. কামাল হোসেন গং স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে বিলীন হয়ে গেছে। আমরা চাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি থাকবে এবং বিরোধী দলেও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি নেতৃত্ব দেবে। তিনি আরও বলেন, ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন না হলে দেশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা পেতো না, তেমনি বঙ্গবন্ধুর সপরিবারে হত্যার পর তার কন্যা দেশে না ফিরলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা পেতো না। এবার নির্বাচনের ইশতেহার অনুযায়ী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করবেন বলেও দৃঢ় প্রত্যায় ব্যাক্ত করেন তিনি।
নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে আবার রাজাকার-আল শামসরা এ দেশে ক্ষমতায় এসেছিল, যাদের জিয়াউর রহমান রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। অথচ পৃথিবীর কোনো দেশেই স্বাধীনতা বিরোধী পরাজিত শক্তি রাজনীতি করার সুযোগ পায় না।
নুরুল মজিদ হুমায়ুন বলেন, বঙ্গবন্ধুর ১০ মার্চের ভাষণেই দেশ পুনঃগঠনের দিক-নির্দেশনা দিয়েছিলেন। আর তখন থেকেই এদেশে শুরু হয়েছিল স্বাধীনতা বিরোধীদের ষড়যন্ত্র। দেশ স্বাধীনের পরেও যা এখনও অব্যাহত আছে। এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।
মাহবুব আলী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা পূর্ণতা পেয়েছে। আমি বিশ্বাস করি মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে ভেজা বাংলার মাটিতে স্থাপিত জাতীয় সংসদে আর কখনও স্বাধীনতা বিরোধীরা স্থান পাবে না।
বিডি-প্রতিদিন/১৩ জানুয়ারি, ২০১৯/মাহবুব