দেশে এখন মাদক নির্মূল এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি বড় চ্যালেঞ্জ। সারা দেশে প্রায় ১ কোটি মানুষ মাদকে আসক্ত। এসব মাদকসেবী, মাদক ব্যবসায়ীদের সংশোধনের জন্য একটা মাস্টার প্লাণ তৈরি করা প্রয়োজন। তাই এ জন্য আইনি সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতি বাগেরহাট-২ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বুধবার সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান। এছাড়াও তিনি দেশের ৩০-৩৫ শতাংশ কর্মহীন বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির আহ্বান জানান।
শেখ তম্ময় বলেন, বঙ্গবন্ধু এক অবিস্মরণীয় নেতার নাম। বঙ্গবন্ধু মাত্র ৫৬ বছর জীবনের ১৪ বছর কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠে ছিলেন। তিনি কোনো মহা দার্শনিক ছিলেন না, মহা পন্ডিতও ছিলেন না। কিন্তু মহা দার্শনিক ও পন্ডিতরা যা করতে পারেননি তিনি তা করেছিলেন। যার প্রমাণ ৭ মার্চের ভাষণ। যা ইউনোস্কো থেকে স্বীকৃতি পেয়েছে। এসময় তিনি ১৫ আগস্ট কালো রাতে নিহতদের নাম নেয়ার সময় আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েন। তাদের নাম নিতেও পারছিলেন না তন্ময়।
এসময় তিনি আরো বলেন, মাননীয় স্পিকার আমাকে ক্ষমাশীল দৃষ্টিতে দেখবেন। আমি আবেগে আক্রান্ত।
আবেগ কাটিয়ে পরে তিনি বলেন, আমাদের এ প্রজন্মের সবচেয়ে বড় সমস্যা মাদক আর কর্মসংস্থান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনেক কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের হাত ধরে যখন তথ্য প্রযুক্তির বিকাশ ঘটতে যাচ্ছে। সেই সময় ১ কোটি লোক মাদকে জড়িত। যারা মাদকের ব্যবসা করে তাদেরকে কোনো ভাবেই নরমভাবে দেখলে হবে না। তবে যারা সেবনকারী তারা তো আমাদেরই ভাই-বোন। মাদকসেবীদের সাধারণ জীবনে ফিরিয়ে আনতে সময় লাগবে। কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে তাদেরকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবে। দেশের এ বিপথগামী যুব সমাজকে জাতীয় সম্পদে রুপান্তরিত করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, জাপান বাংলাদেশে থেকে তরুণদের নিতে আগ্রহী। কিন্তু আমাদের ৫ কোটি তরুণের মধ্যে যদি ১ কোটি তরুণ মাদকাসক্ত হয় সেখানে আমাদের একটা এব্যাপারে পলিসি দরকার, মাস্টার প্ল্যান দরকার এবং আইনের পরিবর্তন প্রয়োজন। আমরা আশা করি আমাদের সকলকে নিয়েই যেন এই মাস্টার প্ল্যানটা করা হয়। আমরা এতে কাজ করতে চাই।
দেশে কর্মসংস্থান হলে যুব-তরুণ সমাজ বিপথ থেকে সুপথে আসবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তম্ময় বলেন, সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রচেষ্টায় দেশে তথ্য সেবার মান অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু তথ্য প্রযুক্তির ইতিবাচক দিকও যেমন আছে তেমনি নেতিবাচক দিকও রয়েছে। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে একদল অশুভ শক্তি আমাদের তরুণ যুবাদের প্রযুক্তির বিভ্রান্তিকর ব্যবহারের মধ্য দিয়ে খারাপ কাজে লাগায়। অর্থাৎ সরকারের বিরোধীতা করার কাজে ব্যবহার করছে। আজ আর ছুরি, বন্দুক, পিস্তল দিয়ে যুদ্ধের চেয়ে সাইবার ক্রাইম বড় হয়ে গেছে। মাইল্ড এজের ছেলে মেয়েদের এ থেকে সুপথে আনতে প্রকল্প হাতে নিতে হবে।
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে উপস্থিত থেকে মনোযোগ সহকারে তার ভাষণ শুনছিলেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন