পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন সংসদে জানিয়েছেন, জাতিসংঘভুক্ত ১৯৩টি দেশের মধ্যে ৫৮টি দেশে বাংলাদেশের ৭৭টি মিশন আছে। ভারতের চেন্নাই এবং রুমানিয়ার বুখারেস্টে মিশন চালুর প্রশাসনিক সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। জাতিসংঘভুক্ত অবশিষ্ট ১৩৪ দেশে বাংলাদেশের কোন কূটনীতিক মিশন নেই।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার সংসদের বৈঠকে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর (সিলেট-৩) লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী যে সব দেশে মিশন নেই সংসদে তার একটি তালিকাও তুলে ধরেন। পাশাপাশি তিনি আরও জানান, যে সকল দেশে বাংলাদেশের মিশন নেই, প্রয়োজনের নিরিখে নতুন মিশন খোলার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে চীনের গুয়াংজু, সাংহাই, সাবেক রাশিয়ার আজারবাইজান ও কাজাখাস্তানসহ কম্বোডিয়া, লাওস ও আফ্রিকার উগান্ডা, জিম্বাবুয়ে, তিউনিশিয়া, তাঞ্জানিয়া ও ঘানা, ইউরোপের আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ফ্রাঙ্কফুট, বুলগেরিয়া, হাঙ্গেরী ও ইউক্রেন, ওশেনিয়র মেলর্বোন ও নিউজিল্যান্ড এবং দক্ষিণ আমেরিকার আর্জেন্টিনা, চিলি ও সাওপাওলো।
মসিউর রহমান রাঙার এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশের ভাবর্মর্তি রক্ষা এবং বিগত ৫বছরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচার মোকাবেলার জন্য বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনসমূহ স্বাগতিক দেশের পত্রপত্রিকায় তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ লিপি প্রেরণ করেছে। পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে দেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি বিনির্মাণে বিভিন্ন ধরনের প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশ এবং প্রয়োজনে লবিস্ট নিয়োগ করেছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচন বিষয়ে বিদেশি কিছু মিডিয়ায় প্রকাশিত নেতিবাচক সংবাদের বিপরীতে ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত 'দি ওয়াশিংটন টাইমস' পত্রিকায় বিশ্লেষণধর্মী লেখা প্রকাশের উদ্যোগ নেন, যার ফলশ্রুতিতে এ জাতীয় নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ প্রায় বন্ধ হয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। এছাড়া ওয়াশিংটস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে ‘বিজিআর’ নামে একটি লবিস্ট গ্রুপ নিযুক্ত করা হয়েছে।
বেনিজির আহমেদ (ঢাকা-২০) এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ. কে আব্দুল মোমেন বলেন, সরকারের উদ্যোগের ফলে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের তাৎপর্যপূর্ণ, দৃশ্যমান ও ইতিবাচক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। এক সময়ে এসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের দাতা গ্রহীতার সম্পর্ক ছিল এবং বাংলাদেশকে কেবলই সস্তা শ্রমিকের যোগানদাতা হিসাবে বিবেচনা করা হতো।
কিন্তু বর্তমানে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা, সংস্কৃতি, কৃষি, শিল্পায়ন, পরিবেশ উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক শান্তি রক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে তারা তাদের উন্নয়ন সহযোগি হিসেবে বিবেচনা করে। উপসাগরীয় দেশগুলোর বাইরে জর্ডান, লেবানন ও ইরাকে বাংলাদেশের শ্রমবাজার সম্প্রসারিত হয়েছে।
বিগত ১০ বছরে প্রায় ৪৮ লাখ বাংলাদেশির মধ্যপ্রাচ্যে কর্মসংস্থান হওয়ারন পাশাপাশি রেমিটেন্স প্রবাহ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া এসব দেশে অবৈধ হয়ে যাওয়া কয়েক লাখ বাংলাদেশিকে নিয়মিতকরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/০৭ মার্চ ২০১৯/আরাফাত