শিরোনাম
২১ মে, ২০১৯ ২০:০৬

ব্যক্তিগত আয়করও ব্যাংকের তহবিল থেকে দেওয়ায় সংসদীয় কমিটির ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ব্যক্তিগত আয়করও ব্যাংকের তহবিল থেকে দেওয়ায় সংসদীয় কমিটির ক্ষোভ

সরকারি নির্দেশ লঙ্ঘন করে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যক্তিগত আয়করও ব্যাংকের তহবিল থেকে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি। ব্যাকিং খাতের স্বচ্ছতার অভাব এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, রূপালী ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যাংকের তহবিল থেকে নিজেদের ব্যক্তিগত আয়কর দিয়েছেন। কমিটি আগামী তিন মাসের মধ্যে ব্যাংক তহবিল থেকে আয়কর বাবদ নেওয়া ২ কোটি ৩২ লাখ ৬৮ হাজার ৫১ টাকা আদায়ের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এই ঘটনাকে ব্যক্তিগত দায় হিসেবে চিহ্নিত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়। পাশাপাশি বকেয়া ঋণের উপর ৯ শতাংশ হারে সুদ আরোপ করে ঋণ পুনঃতফসিলকরণের সুপারিশ করে।

সংসদ ভবনের কেবিনেট কক্ষে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক এসব সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি ডা. মো. রুস্তম আলী ফরাজী। কমিটির সদস্য ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, মো. শহীদুজ্জামান সরকার, জহিরুল হক ভূঁঞা মোহন, মনজুর হোসেন, আহসানুল ইসলাম (টিটু), মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, ওয়াসিকা আয়েশা খান, মো. জাহিদুর রহমান বৈঠকে অংশ নেন। 

সংসদের গণসংযোগ বিভাগ জানায়, বৈঠকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন রূপালী ব্যাংক লিমিটেড ও বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের হিসাব সম্পর্কিত  মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের বার্ষিক অডিট রিপোর্ট ২০১৩-১৪ এর অডিট আপত্তিগুলো কমিটির নির্দেশনার আলোকে নিষ্পত্তির সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদন না নিয়ে আর্থিক ক্ষমতা বহির্ভূতভাবে মেয়াদী ঋণ বিতরণ, পর্যাপ্ত সহায়ক জামানত গ্রহণ না করে ব্যাংকের যারাই এই ঋণ প্রদানের সাথে জড়িত ছিলেন তাদের সবাইকে দায়ী রাখার বিধান চালুর সুপারিশ করে কমিটি। একইসঙ্গে কমিটি বকেয়া ঋণের উপর ৯ শতাংশ হারে সুদ আরোপ করে ঋণ পুনঃতফসিলকরণের সুপারিশ করে। 

অডিট আপত্তিতে কমিটি দেখতে পায় যায় যে,  ২২ কোটি ৭৯ লাখ ৪ শত ৭৯ টাকা ঋণ নিয়ে রফতানি করতে ব্যর্থ প্রতিষ্ঠান (মেসার্স ডিভাইন নীট ওয়্যার লি.) এর মেয়াদোত্তীর্ণ অনাদায়ী ঋণ আদায় না করে ব্যাংকের কর্মকর্তারা উক্ত ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত ব্যক্তির নামে নতুন ঋণ দিয়েছে। কমিটি এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং যারা এমন ঋণ প্রদানের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ দায়েরকৃত মামলা তদারকী করার সুপারিশ করেছে। 

বৈঠকে সীমাতিরিক্ত চলতি মূলধন সিসি হাইপো ঋণবিতরণ, ডাউন পেমেন্ট ব্যতীত পুনঃতফসিলিকরণ এবং মঞ্জুরিপত্রের শর্তানুয়ায়ী মেয়াদী ঋণ ও ফোর্সড লোন আদায়ে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যাংকের ১১৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। কমিটি এ ক্ষেত্রে ব্যাংকের যারা ঋণ প্রদানের সাথে জড়িত তাদের সকলকে দায়ী করার পাশাপাশি বকেয়া ঋণের উপর ৯ শতাংশ হারে সুদ আরোপ এবং দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করে ঋণ পুনঃতফসিলকরণের সুপারিশ করে। 

বৈঠকে সিএন্ড এজি মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক, অডিট অফিস এবং সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর