জেলখানার কয়েদির মতো জীবনযাপন করেও বেঁচে থাকতে হলে শ্রমিকদের মাসিক ন্যূনতম মজুরি ৩০ হাজার টাকা হওয়া উচিত-এমন অভিমত দিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ টেক্সটাইল-গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের আয়োজনে ‘শ্রমিকদের জন্য কেমন বাজেট চাই?’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তারা এ কথা বলেন। বৈঠকে শ্রম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সুলতান উদ্দিন আহমেদ, বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. গোলাম মোয়াজ্জেমসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।
শ্রম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজেট কেবল অর্থনীতির দলিল নয়, এটি একটি দেশের উন্নয়নের দিকনির্দেশনা। আমরা যে রিপোর্ট দিয়েছি সেটা যদি মনিটরিং করা না হয়, সেটা কাগজের দলিল হয়ে যাবে। তাই শ্রমিক আন্দোলনের পাশাপাশি সংস্কার কমিশনের রিপোর্টও মনিটরিং করতে হবে।
বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আমরা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির পক্ষেই কাজ করি। তাদের জন্য বিদেশি সহায়তায় বিশেষায়িত হাসপাতাল গঠনের পক্ষে আমরা। সিপিডির ড. গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাজেটে শ্রম মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ দিনদিন কমছে। আগের বাজেটে ১০০ টাকায় ১১ পয়সা বরাদ্দ থাকলেও এখন তা ৯ পয়সায় নেমেছে। তিনি শ্রমিক প্রতিনিধিদের বাজেট প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্তির দাবি জানান।
বৈঠকে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ টেক্সটাইল-গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি মাহবুবুর রহমান ইসমাইল আট দফা দাবি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দেশে প্রায় ৮ কোটি শ্রমজীবী মানুষ থাকলেও তাদের জন্য আলাদা কোনো বাজেট বরাদ্দের ধারা নেই, যা অনাকাঙ্ক্ষিত। বর্তমান বাজার দরের প্রেক্ষাপটে একজন কয়েদির মতো বাঁচতেও একজন শ্রমিকের মাসে অন্তত ৩০ হাজার টাকা দরকার। তাদের দাবিগুলো হলো- শ্রমিকদের জন্য রেশনিং চালু, ১০ শতাংশ বাজেট বরাদ্দ, আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল, নিরাপত্তা তহবিল, আবাসন সুবিধা, স্বাস্থ্য ও জীবন বিমা, সার্বজনীন কল্যাণ তহবিল গঠন এবং জাতীয় সংসদে শ্রমিক কক্ষ স্থাপন।
বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক কাজী আজিজুল ইসলাম, আইনজীবী শারমিন সুলতানা মৌসুমী, শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ফয়েজুর রহমান, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আবদুর রহমান, মেকানিক ফেডারেশনের জসিম উদ্দিন ও শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের রাজু আহমেদ।