রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিমার্ণাধীন ‘স্বাধীনতা স্তম্ভ’-এর নকশায় সংশোধনীর প্রস্তাব করেছে সংসদীয় কমিটি। মূল নকশায় স্বাধীনতা স্তম্ভে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ভাস্কর্য রয়েছে। সংসদীয় কমিটি বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি স্বাধীনতা সংগঠকদের ভাস্কর্যও নকশায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিশু পার্কের পাশে বাস্তবায়নাধীন ‘স্বাধীনতা স্তম্ভ’ প্রকল্প পরিদর্শনে গিয়ে কমিটি এসব সুপারিশ করে। সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত অধিদফতরের স্থাপত্য অধিদফতর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। সংসদ ভবনে গত ২৬ মে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক মঙ্গলবার কমিটির সদস্যরা প্রকল্পের সার্বিক কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনে যান।
পরিদর্শন শেষে কমিটির সভাপতি শাজাহান খান সাংবাদিকদের বলেন, আজ আমরা প্রথমমত প্রকল্পের নকশা সম্পর্কে ধারণা নিয়েছি। নকশা দেখে কিছু সংশোধনী প্রস্তাব দিয়েছি। আমাদের সভায় সংশোধনী প্রস্তাবগুলো উত্থাপন করব। এর মধ্যে রয়েছে- বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ভাস্কর্যের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের যারা সংগঠক ছিলেন তাদের ভাস্কর্যও যেন ছোট করে হলেও স্থান পায়। এছাড়া জাতীয় চার নেতার ভাস্কর্য করার কথা বলা হয়েছে।
এসময় কমিটির সভাপতির সাথে ছিলেন কমিটির অন্যতম প্রভাবশারী সদস্য জাসদের নির্বাহী সভাপতি মঈনুদ্দিন খান বাদল এমপি। পরিদর্শনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সব সদস্য উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও অন্যরা উপস্থিত ছিলেন না। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি বলেন, ‘সকলের থাকার কথা, অনেকে ঢাকার বাইরে আছেন, কেউ ব্যস্ত আছেন। তাই আসতে পারেননি।’
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিশু পার্কের বাস্তবায়নাধীন এই স্বাধীনতা স্তম্ভ নিমার্ণ প্রকল্পের প্রাক্কলিত মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। এই প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা রয়েছে চলতি বছরের ডিসেম্বর মধ্যে। তবে প্রকল্পের কাজ ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে শুরু হওয়ায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়তে পারে। ২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন লাভ করে।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে- নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরা। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কাল রাতের বর্ণনা এবং ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ঐতিহাসিক আত্মসমর্পণের স্মৃতিকে সংরক্ষণ করা। এছাড়া স্বাধীনতা স্তম্ভের ভূগর্ভস্থ জাদুঘরে বিভিন্ন প্রদর্শনী এক নজরে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রতিফলন ঘটানো।
সংসদের গণসংযোগ বিভাগ জানায়, সংসদের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি ঢাকাস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্মাণাধীন ‘‘স্বাধীনতা স্তম্ভ’’ প্রকল্প কাজের অগ্রগতি সরেজমিনে পরিদর্শনের জন্য কমিটির সভাপতি শাজাহান খান এর নেতৃত্বে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন। কমিটি প্রকল্প কাজে কিছু সংশোধনীর সুপারিশসহ প্রকল্প এলাকায় একটি হল রুমের (লাইট এন্ড সাউন্ড সিষ্টেম) ব্যবস্থা গ্রহণের সুপরিশ করে। পরিদর্শনকালে কমিটির সদস্য মইনউদ্দীন খান বাদল অংশগ্রহণ করেন। এসময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, গণপূর্ত বিভাগ ও সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিডি-প্রতিদিন/২৮ মে, ২০১৯/মাহবুব